বিধানসভার ধর্মনিরপেক্ষতাকে কুৎসিতভাবে কলুষিত করছে বিরোধীদল বিজেপি। মানছে না সংবিধানও। উগ্র ধর্মীয় মেরুকরণ ও সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী ও তার দল বিজেপি বিধানসভাকে হট্টমেলায় পরিণত করছে প্রতিনিয়ত। মঙ্গলবার এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন তৃণমূলের মন্ত্রী-বিধায়করা। বিজেপির এই একপেশে গাজোয়ারি ও উগ্র অসভ্যতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন বিধানসভার অন্দরেই। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ বিজেপির এই বর্বরতা ও অসভ্যতার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন এদিন।
অরূপ বিশ্বাস বলেন, এরা মানুষের কাজ করে না। শুধুই ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করে। বিধায়করা যখন শপথ নেন, তখন সব সম্প্রদায়ের কথাই বলা হয়। শুধুমাত্র একটি সম্প্রদায়ের জন্য জনপ্রতিনিধি হয় না। বিজেপি যা করছে, তা সংবিধান-বিরোধী। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, এরা শুধুই হিন্দু-হিন্দু করছে! ওদের কি হিন্দুত্বের ইজারা দেওয়া হয়েছে? চন্দ্রিমার কথায়, আমিও তো সোমবার শিবের ব্রত করি, গরদের শাড়ি পরি। তাই বলে কি চিৎকার করে নিজেকে হিন্দু বলে জাহির করতে হবে? আমরা বিধায়ক-মন্ত্রীরা সংবিধান মেনে চলার শপথ নিই। আর সংবিধানের মুখবন্ধেই বলা আছে, কোনও বৈষম্য বা মেরুকরণ থাকবে না। এই শপথ নিয়ে যদি আমি শুধুমাত্র একটি সম্প্রদায়ের কথাই বলি, তবে সংবিধানকে বুড়ো আঙুল দেখানো হয়। আসলে মানুষকে ভালবাসতে হয়। আমরা বিবেকানন্দের আদর্শে বিশ্বাসী। তিনিই তো বলেছেন, জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।
বিধানসভার অন্দরে বিজেপির এই ধর্মীয় উগ্রতার জন্য ও বাংলার সম্প্রীতি নষ্ট করার প্রবল চেষ্টার জন্য বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন অরূপ-চন্দ্রিমারা। সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেন, এই ধর্মীয় মেরুকরণ সংক্রান্ত যাবতীয় বক্তব্য যেন বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়। অরূপ অধ্যক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যাঁরা মানুষের কথা বলার জন্য শপথ নিয়ে এসে অন্য কাজ করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পরে বলেন, বিজেপি সদস্যরা ধর্মীয় কথা যা বলেছেন, তা কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ক্ষুব্ধ অধ্যক্ষের মতে, বিধানসভা পরিচালনার জন্য সকলের সহযোগিতা চাই। তাঁর সংযোজন, মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন। আশা করব, এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে সকলে বিরত থাকবেন। বিধানসভায় বক্তব্য রাখার সময় বাক্য ব্যবহারে সংযত থাকা উচিত। বিরোধীরা লাগাতার এই ধরনের কাজ করলে তিনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন, সাফ জানিয়ে দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- বিরাটের পর পরিবার নিয়ে বিসিসিআই-এর কড়া নিয়ম নিয়ে মুখ খুললেন কপিল দেব, কী বললেন তিনি?
_
_
_
_
_
_
_




























































































































