মোদির বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পে ভাঁওতাবাজি, বিপুল আর্থিক অনিয়মের পর্দাফাঁস

0
1

কোথায় গেল প্রধানমন্ত্রীর ‘না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা’ প্রতিশ্রুতি? ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ নিয়ে ফাঁস হয়ে গেল মোদি সরকারের মিথ্যার ভাণ্ড। পর্দা ফাঁস হয়ে গেল মোদি গ্যারান্টির। এক আরটিআইয়েই বেআব্রু মোদির ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ নিয়ে মিথ্যাচার। সেখানে মোট বরাদ্দ ৯৫২ কোটির অর্ধেকেরই হিসেব নেই! উধাও ৪৫৫ কোটি টাকা।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্ক প্রসূত কন্যাশ্রী প্রকল্পকে নকল করে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ কর্মসূচি চালু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপর তা নিয়ে মিথ্যা প্রচারের ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই প্রকল্পেই এবার প্রকট হয়ে গেল গুরুতর আর্থিক অনিয়ম। তথ্যের অধিকার আইনে সামনে এসেছি এমনি চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত ১০ বছরে ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ খাতে খরচ হয়েছে ৯৫২ কোটি ৪ লক্ষ টাকা। কিন্তু এর মধ্যে প্রায় ৪৫৫ কোটি টাকা কোথায় খরচ হল, তার কোনও হিসেব নেই। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত রাজ্যগুলিকে প্রদেয় বরাদ্দের পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। তাতেই ধরা পড়ে গিয়েছে গরমিল। এখন প্রশ্ন, কোথায় ‘উধাও’ হয়ে গেল ওই বিপুল টাকা? সেই প্রশ্নের কোনও জবাব নেই নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের।
সমাজকর্মী অজয় বসু বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পে কোন রাজ্যে কত আর্থিক বরাদ্দ, তা তথ্য জানার অধিকার আইনে জানতে চেয়েছিলেন। সেই রিপোর্টে উঠে আসে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত মোট ৪৯৬.৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে দেশের ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে। তাহলে বাকি প্রায় ৪৫৫ কোটি টাকা কোথায় গেল? তবে কি এই বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে, শুধু প্রচারেই? কেননা ২০২২ সালে সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক জানিয়েছিল, ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৯-২০ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৫৫৫ কোটি ২৭ লক্ষ বরাদ্দ হয়েছিল। তার মধ্যে ৩৫১ কোটি ৫৫ লক্ষই খরচ হয়েছে বিজ্ঞাপন ও প্রচারে। বাকি নামমাত্র টাকা প্রকল্পের কাজে খরচ হয়। এবার আরটিআইয়ের জবাবে আরও বিস্ফোরক তথ্য সামনে এল। সেখানে ৪৫৫ কোটি টাকার কোনও হিসেব নেই। যে ৪৯৬ কোটি টাকা রাজ্যগুলিকে বরাদ্দ করা হয়েছে, তার মধ্যে আবার খরচ হয়েছে ৩৭০ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা।বাকি সাড়ে ১২৬ কোটি টাকা এখনও পড়ে রয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কোষাগারে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে মোদির বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্প ব্যর্থ। বাংলার কন্যাশ্রী প্রকল্পের সঙ্গে তা কোনওভাবেই তুলনায় আসে না।