খবরের কাগজ থেকে দূরদর্শনে নির্ভরতার দিন অতীত। রূপান্তরের যুগে ডিজিটাল মিডিয়ার (digital media) জনপ্রিয়তা বেড়েছে। একপেশে বা উচ্চগ্রামের সংবাদ পরিবেশনের বাইরে সাধারণ মানুষের জনপ্রিয়তাও লাভ করেছে বর্তমান সময়ের ডিজিটাল মিডিয়া। তার পরেও খবর সংগ্রহ থেকে পরিবেশনে বারবার সমস্যার মুখে পড়তে হয় সেই ডিজিটাল মিডিয়াকেই। উপরন্তু মূল স্রোতের মিডিয়াগুলি যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করে, তার ছিঁটেফোঁটাও পায় না এই সংবাদ মাধ্যমগুলি। একজোট হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেই ডিজিটাল মিডিয়া ফেডারেশন (Digital Media Federation) গঠন করে অবশেষে প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত করা হল রবিবার। সেখানেই সরকার তথা রাজনৈতিক দলগুলির কাছে তুলে ধরা হল সংবাদ মাধ্যম হিসাবে কাজ করার মূলগত কিছু দাবি। সেক্ষেত্রে তাঁদের আরও কোন কোন দিকে উন্নতি প্রয়োজন, তা নিয়ে সম্মেলনে আলোচনায় তুলে ধরা হল রাজ্যের শাসকদলের পক্ষ থেকেও।
কলকাতা প্রেস ক্লাবে (Kolkata Press Club) নিজেদের প্রথম রাজ্য সম্মেলনে যে দাবিগুলি তাঁরা তুলে ধরেন তার মধ্যে অন্যতম সাংবাদিক হিসাবে ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকদের স্বীকৃতির দাবি। সেই সঙ্গে প্রিন্ট (print media) ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার (electronic media) সমান সুযোগ সুবিধার দাবিও তুলে ধরা হয়। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবি করেন সংগঠনের সদস্যরা। সেই সঙ্গে ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকদের কলকাতা প্রেস ক্লাব সহ অন্যান্য প্রেস ক্লাবগুলিতে সদস্য হিসাবে গ্রহণেরও দাবি তোলা হয়।
প্রিন্ট মিডিয়া থেকে ডিজিটাল মিডিয়ায় রূপান্তরে শুভেচ্ছা জানিয়ে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ফেডারেশনের সদস্যদের জন্য বার্তা দেন, যতদিন যাবে তত ডিজিটাল মিডিয়ার কার্যকরিতা আরো বাড়বে।। একটা সময় প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়া কিছু ভাবা যেত না আকাশবাণী দীর্ঘ সময় ধরে একটা প্রভাব ছিল এখনো রয়েছে। এরপর দূরদর্শন এবং প্রাইভেট নিউজ এলো। এখন ধীরে ধীরে ডিজিটাল মিডিয়ায় (digital media) আমরা ঢুকে যাচ্ছি। যখন নতুন কিছুতে রূপান্তর করা হয় তখন কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা (technical problem) এবং অন্যান্য সমস্যা হয়।
সেই সঙ্গে তিনি পরামর্শ দেন, যখন আমি কথা বলছি তখন আমার চোখ সোজাসুজি ক্যামেরায় থাকছে কিনা, আমার শব্দের ভান্ডার শেষ হয়ে যাচ্ছে কিনা দেখা উচিত। আমি আমার শ্রোতাকে কতটা প্রভাবিত করতে পারছি। ডিজিটাল মিডিয়া এখন এমন একটা জায়গায় এসেছে যেখানে খবর বলতে আগে কয়েকটা হাউস যেটা চাপিয়ে দেবে সেটাই ছিল। কিন্তু এখন ডিজিটাল মিডিয়া (digital media) সেই থিওরিকে (theory) ভেঙে ছত্রছান করে দিয়েছে। এটা প্লাস পয়েন্ট (plus point)।
পাশাপাশি তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্বের তরফে ডিজিটাল মিডিয়া ফেডারেশনের দাবিকে মান্যতা দিয়ে তাঁদেরকে কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়। তৃণমূল মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের মত, ডিজিটাল মিডিয়া এমন জায়গায় পৌঁছাক যেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের পাশে থাকার দরকার হবে না। কারা ডিজিটাল মিডিয়া আর কারা ব্যক্তিগত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সেই পার্থক্যটা স্পষ্ট হোক। দুটো একত্রিত কোনওভাবে না হয়ে যায় সেটা দেখুন। সরকারের কী করার কথা সেটা সরকারের কাছে পৌঁছে দেব। আপনারা স্বাধীন, সেই স্বাধীনতার জায়গাটা আরও শক্তিশালী করুন। তথ্য তুলে দেওয়ার যে কাজটা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বা প্রিন্ট মিডিয়া করছে না সেটাও করুন। তৃণমূলের নেতা অরূপ চক্রবর্তী দাবি করেন, সংবাদ মাধ্যমগুলি আগে থেকে ঠিক করে নিল ন্যারেটিভ কী হবে, সেটা আর এখন হয় না ডিজিটাল মিডিয়ার কারণে। মানুষ নিউজের বদলে ভিউজ দেখতে পছন্দ করছেন। সেই খবর যেন সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে যেন হয় সেটা দেখতে হবে।
–
–
–
–
–