CPIM-এর রাজ্য সম্মেলনে তারাপীঠ-ফুরফুরা শরিফ! আর্যভট্টের ছবি কোথায়? মোক্ষম খোঁচা কুণালের

0
2

২০১১ সালের পর থেকে রাজ্যে পায়ের তলার জমি হাতড়াতে থাকা সিপিআইএম (CPIM) চলতি বছরের রাজ্য সম্মেলন শুরু করল হুগলির ডানকুনিতে (Dankuni)। গত বছরের থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই সেখানে আলাদা। একদিকে রাজনৈতিকভাবে লোকসভায় ( আরও রক্তক্ষরণের সম্মুখিন বামেরা। তার উপর এবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya) ও প্রাক্তন সিপিআইএম সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির (Sitaram Yechuri) মতো নেতৃত্বকে নেতৃত্বের স্থানে পাচ্ছেন না সিপিআইএম নেতারা। তবে জনবিচ্ছিন্ন সিপিআইএম নেতৃত্বের জেলা সম্মেলন থেকেও বর্তমান নীতি নিয়ে প্রশ্ন এবছর উঠেছে। সম্মেলনের সাজানো মঞ্চে দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা ব্যক্তিদের ছবি থাকলেও শূন্যে নেমে যাওয়া বামেরা আর্যভট্টের ছবি কেন রাখেননি নেতারা, রসিকতার ছলে কটাক্ষ তৃণমূলের।

২৭ তম রাজ্য সম্মেলনেও দেশ-বিদেশের অর্থনীতি রাজনীতিতে একটা বিপুল অংশে আটকে থাকেন সিপিআইএম (CPIM) নেতৃত্ব। ইউরোপের ফ্যাসিবাদের পাশাপাশি কলম্বিয়া, শ্রীলঙ্কার আলোচনা উঠে আসে কেন্দ্রীয় কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাতের (Prakash Karat) কথায়। সেই মতোই সাজানো হয় রাজ্য সম্মেলনের প্রাঙ্গনও। হো চি মিন থেকে চে – একইরকম বিদেশী রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রাধান্য পায় প্রাঙ্গন সজ্জায়। তবে এবারের সম্মেলনে প্রাসঙ্গিক থাকতে চোখে পড়ে শ্রীরামকৃষ্ণ, তারাপীঠের মতো ছবিও। আবার ফুরফুরা শরিফের ছবিও তুলে ধরা হয় প্রাঙ্গনে। যা দেখে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের রসিকতা, ওখানে ওনাদের প্রদর্শনীতে অনেক ছবি রেখেছেন। আর্যভট্টের ছবি রাখা প্রয়োজন ছিল। আর্যভট্টই শূন্যের আবিষ্কার করেছিলেন। শূন্য যে পায় তারা একটা আর্যভট্টের ছবি রাখবে না।

প্রকাশ কারাত থেকে প্রবীন বামনেতা বিমান বসু, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Mohammed Selim) যেমন উপস্থিত ছিলেন, তেমনই ছিলেন মানিক সরকার, বৃন্দা কারাত। আবার ঘটা করে আরজিকর আন্দোলনে উস্কানিমূলক ফোন বার্তা সামনে আসা কলতান দাশগুপ্তর উপস্থিতিও সম্মেলনে ছিল উজ্জ্বল। তাঁদের আলোচনায় আরএসএ-এর সাম্প্রদায়িক মতাদর্শ, দক্ষিণপন্থার কুফল তুলে ধরে একইভাবে তাত্ত্বিক আলোচনায় আটকে থাকেন সিপিআইএম (CPIM) নেতৃত্ব। আবার দেশের কৃষিনীতি, শিক্ষানীতি নিয়েও আলোচনা জায়গা পায় প্রথম দিনের আলোচনায়। যদিও রাজ্যের ক্ষেত্রে, বাংলার মানুষের জন্য গঠনমূলক আলোচনা এবারেও প্রথমদিনে ছিল অনুপস্থিত।

মূলক সমালোচনার উপর নির্ভর করেই এবারেও রাজ্য সম্মেলনের প্রথম দিনের সুর বাঁধলেন রাজ্য সম্পাদক সেলিম। তার মধ্যেও অবশ্য গ্রামীণ এলাকায় সংগঠন মজবুত করার বার্তা কর্মীদের দেন তিনি। কার্যত স্পষ্ট এবার সিপিআইএম নেতৃত্ব স্বীকার করে নিতে শুরু করেছেন, তাঁরা কতটা জনবিচ্ছিন্ন। রাজ্য সম্মেলনের আগে জেলা সম্মেলনগুলিতে (district committee) কার্যত এই বার্তাই উঠে এসেছিল, যেখানে রাজ্য কমিটির (state committee) চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের বিরোধিতা একাধিক জেলা স্তরের নেতৃত্ব করেছিলেন। যার অন্যতম উদাহরণ ছিল দুই ২৪ পরগণার জেলা কমিটিগুলির সম্পাদক নির্বাচন। এহেন জনবিচ্ছিন্ন সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্মেলন নিয়ে কুণালের কটাক্ষ, দিনের পর দিন শূন্য থাকা। লোকসভায় শূন্য, বিধানসভায় শূন্য। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। ২০১১ সালে প্রত্যাখ্যাত। তারপর থেকে দম হল না সিপিআইএমের একা লড়ার। কংগ্রেসের পায়ে ধরে প্রতিবার ভোট করে। তাই আর্যভট্টর ছবি রাখা উচিত ছিল।

যদিও এবার পুরোনো পন্থা থেকে খানিকটা সরে আসার ইঙ্গিতও মিলেছে ২৭তম রাজ্য সম্মেলনে। লাল চায়ের পেয়ালা বা ভাঁড়ে আটকে থাকা বাম নেতারা এবারের সম্মেলনে ফলাও করে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করেছেন কর্মীদের জন্য। কৃ্চ্ছসাধনে সংগঠন চালানো থেকে সরে আসার ইঙ্গিত, অভিমত রাজনীতিকদের।