এক ইঞ্জেকশনেই হাওয়া হাই-কোলেস্টরাল! এখনই উচ্ছ্বসিত নন বিশেষজ্ঞরা

0
3

বাজারে হরেক রকমের ভোজ্য তেল, সঙ্গে নানা ধরনের সিরিয়াল ফুড- সবার দাবি খেলেই হাই কোলেস্টরাল ভ্যানিস। আর তা কিনতে ছুটছেন অনেকেই। কারণ, শরীরে কোলেস্টেরল (Cholesterol) নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। না হলেই বিপদ- হার্ট অ্যাটাক আর ব্রেন স্ট্রোক! এই আশঙ্কা অনেকেরই। তবে, সেই চিন্তার নিরসনে এগিয়ে এসেছেন আমেরিকা ও ইটালির একদল বিজ্ঞানী। একটি ইঞ্জেকশন না কি তাঁরা আবিষ্কার করেছেন, যা একবার নিলেই দীর্ঘদিন দূরে থাকবে কোলেস্টেরল। খেতে হবে না কোনও ওষুধ। সম্প্রতি ‘নেচার মেডিসিন’ (Nature Medicine) জার্নালে এই গবেষণা খবর প্রকাশিত হয়েছে।

আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসের বোস্টন ও কেমব্রিজ এবং ইটালির মিলানের গবেষকরা ইঁদুর এবং বাঁদর-লেঙুরের মতো স্তন্যপায়ীদের উপরে গবেষণা চালান। তাতে তাঁরা দেখেছেন, ‘ক্রিসপার’ নামে এক ধরনের প্রোটিন, যেটি ইঞ্জেকশন হিসেবে ‘জিন এডিটিং’-এর মাধ্যমে কোলেস্টেরলের সমস্যা মেটাতে পারে। একবার ওই ইঞ্জেকশন নিলে স্বাভাবিক থাকবে কোলেস্টেরল। অন্তত এক বছর আর ওষুধ খেতে হবে না। দাবি বিজ্ঞানীদের।

এই খবরে সাড়া পড়েছে বিশ্বজুড়ে। কলকাতাও (Kolkata) উৎসুক। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (Cholesterol) বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে ‘প্রো-প্রোটিন কনভার্টেজ সাবটিলিসিন কেক্সিন টাইপ-৯’ নামে একটি প্রোটিনের ভূমিকা থাকে। সংক্ষেপে বলে পিসিএসকে-৯। রক্তে এই প্রোটিনের বেশি মাত্রায় উপস্থিতিই কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। তাই কোলেস্টেরল স্বাভাবিক রাখতে ওষুধ দেওয়া হয়। ১-৩ মাস অন্তর ‘পিসিএসকে-৯ ইনহিবিটর’ ইঞ্জেকশনও ব্যবহার করা হয়। তবে শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, এই গবেষণায় যে ইঞ্জেকশন আবিষ্কৃত হয়েছে, সেটি পিসিএসকে-৯ প্রোটিনের মূল যে ত্রুটিযুক্ত জিনটি সেটিকেই শুধরে দেবে। এন্ডোক্রিনোলজিস্ট সতীনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, হাই কোলেস্টেরলের অনেক রোগীকেই পিসিএসকে-৯ ইনহিবিটর ইঞ্জেকশন নিতে পরাপর্শ দেওয়া হয়। তবে, সিঙ্গল শট ইঞ্জেকশন অভূতপূর্ব আবিষ্কার। হাইপার-কোলেস্টেরলেমিয়ার শিকার রোগী, বিশেষ করে যাঁদের পরিবারে এই রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের জন্যে সম্ভাব্য যুগান্তকারী চিকিৎসা হতে পারে বলেও জানান ডা. মুখোপাধ্যায়।
আরও খবর: মহারাজের বায়োপিক মুক্তি কবে, অভিনেতার নাম জানিয়ে দিন ঘোষণা সৌরভের!

তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, যতদিন না মানুষের উপরে এই ক্লিনিকাল ট্রায়ালের সাফল্য মিলবে, ততদিন উচ্ছ্বসিত হওয়া জায়াগা নেই। কারণ, জিন এডিট করার পরে কোলেস্টেরল কমলেও, ওই জিনের অনুপস্থিতিতে শরীরে কোনও বিরূপ বা পার্শ্ব–প্রতিক্রিয়া হবে কি না, তা এখনই স্পষ্ট নয়। তবে, নেচার মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দাবি, প্রয়োজনে ফের এডিট করে জিন এডিটিংকে আগের অবস্থায় ফেরানো সম্ভব। তবে, হিউম্যান ক্লিনিকাল ট্রায়াল না হওয়া পর্যন্ত শুধু অপেক্ষা করতে হবে।