যেন গোবলয়ের কোনও বিবাহ অনুষ্ঠান! মাথায় গেরুয়া পাগড়ি বেঁধে হাজির সকলে। কিন্তু না, এই কাণ্ড পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। মঙ্গলবার, বিজেপি বিধায়কদের দেখে মনে হল যেন ফ্যান্সি ড্রেস কম্পিটিশন। অধিবেশনের শুরু থেকে সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে এদিন হিন্দু ‘সেজে’ বিধানসভার বাইরে গিয়ে বসে পড়েন বিরোধী দলনেতা-সহ বিজেপি বিধায়করা। ‘সহি হিন্দু’ সাজতে গিয়ে মাথায় বাঁধলেন গেরুয়া পাগড়ি। নেটিজেনদের মতে, এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়।
বাঙালির পাগড়ি ব্যবহার ব্রাহ্ম সমাজে চল ছিল। যদিও সে পাগড়ির গড়ন ছিল আলাদা। বিবেকানন্দও পাগড়ি পরেছেন কিন্তু সেও এক রাজার অনুরোধে। তবে এদিনের বঙ্গ বিজেপি বিধায়কদের দেখে মনে হল তাঁরা যেন বেগুসরাই গ্রামের ‘বরাতি’। মাথায় গেরুয়া পাগড়ি দিয়ে সঠিক হিন্দু হতে পারলেন কি না বোঝা না গেলেও অবাঙালি নিশ্চিতভাবেই হয়েছেন তাঁরা – খোঁচা ওয়াকিবহুল মহলের। তৃণমূল যে বহিরাগত সংস্কৃতির কথা বলে এসেছে, সেই কথাই প্রমাণ হল মঙ্গলবার বিধানসভায়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের ‘ধারক-বাহক’ বিজেপি মনে করেছিল সংখ্যালঘু তোষণ, সরস্বতী পুজোয় হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ ইস্যু নিয়ে সরকারকে খুব প্যাঁচে ফেলবে। অধিবেশন কক্ষে হুলস্থুল থেকে শুরু করে স্পিকারের দিকে কাগজ ছুড়ে চূড়ান্ত অভব্য আক্রমণ করেছিলেন শুভেন্দু & কোম্পানি। কিন্তু শেষে এসে অবাঙালি কায়দায় পাগড়ি পরে সরকারকে বিরোধিতা করতে গিয়ে বাঙালির মর্যাদা বোধকে ধুলোয় মিশিয়ে দিলেন তাঁরা।
এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান অথবা দিল্লি হলে মানাত। তবে ‘মিনি ভারত’ বঙ্গদেশের রাজনীতিতে এই ঘটনা প্রমাণ করে দেয় বিজেপির সঙ্গে বাংলার মাটির নাড়ির টান কম। যেকারণে এত জাতি-উপজাতিগত বৈচিত্র থাকা সত্ত্বেও মাড়োয়ারি কায়দায় পাগড়ি পরতে হয় তাঁদের।
আরও পড়ুন- প্রবল শিলাবৃষ্টি ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইলে! ফসলের প্রচুর ক্ষতির আশঙ্কা
_
_
_
_
_
_
_