নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে মহাকুম্ভে যাওয়ার যাত্রীদের ভিড়, পদপিষ্ট হয়ে মৃত ১৭

0
1

নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় এবং ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়ে তিন শিশু-সহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অনেকে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১১টা নাগাদ ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়ে চার জন মহিলা অজ্ঞান হয়ে যান। তাদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রেলমন্ত্রক বিজেপির। নয়াদিল্লি দেশের রাজধানী। দিল্লিতে এখন ক্ষমতায় বিজেপি সরকার। কিন্তু সরকারি অপদার্থতা কিছুতেই কমছে না। মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু, বারবার আগুন, জলভাত হয়ে যাওয়ার পর এবার কুম্ভগামী ট্রেন ধরতে গিয়ে নয়াদিল্লি স্টেশনে প্রবল ভিড়ে পদপিষ্ট। এর জেরে কমপক্ষে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় ৩২ জন। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা নিশ্চিতভাবে বাড়ছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৩ এবং ১৪ নম্বর প্লাটফর্মে কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের ভিড় ছিল। ওই দুই প্লাটফর্মে ট্রেন আসতে দেরি হচ্ছিল বলেও যাত্রীদের অভিযোগ। কেউ কেউ দাবি করতে থাকেন, দু’টি ট্রেন বাতিল হয়ে গিয়েছে। ফলে ভিড়ের মধ্যে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। অনেকেই দাবি করেন, পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায় ওই দুই প্লাটফর্মে।

স্বাধীনতা সেনানি এক্সপ্রেস ও ভূবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস দেরিতে চলছিল। ফলে ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। সেই সময় প্রয়াগরাজগামী ট্রেনটি স্টেশনে ঢুকলে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মের এসকেলেটর এবং ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রবল ভিড়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। যাত্রীরা পড়ে যান। অন্যরা পড়ে যাওয়া যাত্রীর উপর দিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। এর ফলে চরম পরিণতির মুখোমুখি হন প্রয়াগরাজগামী যাত্রীরা। পুলিশ ও দমকল যখন এসে পৌঁছয় তখন ঘটনাস্থলেই ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলেও অধিকাংশ আশঙ্কাজনক।

আজ রবিবারই হয়তো দেখা যাবে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ঘটনার পর যথারীতি রেলমন্ত্রী সবকিছু নিয়ন্ত্রণে জানিয়েছেন। কিন্তু এই মানুষগুলির মৃত্যুর কারণ রেলমন্ত্রকই তা সকলেই বুঝেছেন। রেলযাত্রা এখন মানুষের কাছে বিভীষিকার যাত্রা হয়ে উঠেছে। মহাকুম্ভকে কেন্দ্র করে কার্যত মৃত্যুমিছিল চলছে। উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লি- ডবল ইঞ্জিন সরকারের এটাই এখন বাস্তব চিত্র। আহতরা অনেকেই জানাচ্ছেন, রেলের ঘোষণার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।

এই ঘটনার পরেই শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “পদপিষ্টের ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে প্রশাসন।” শোক প্রকাশ করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও। উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।

শোক প্রকাশ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “স্টেশনে পদপিষ্টের ফলে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।” পাশাপাশি, তিনি মৃত পরিবারদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।