রাম-বাম আঁতাঁত? বিজেপি নেত্রীর চলচ্চিত্র উৎসবে সিপিএম নেতার ফিল্ম

0
2

রাম-বাম আঁতাঁতের অভিযোগ বাংলার শাসকদলের বহুদিনের। শুধু নির্বাচনের সময় নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সমালোচনাতেও লাল-গেরুয়ার সুর মিলে যায় বলে অভিযোগ ঘাসফুল শিবিরের। আর সেই অভিযোগ উস্কে দিয়েই এবার বিজেপি নেত্রীর উদ্যোগে আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসবে নিজের তৈরি ছবি নিয়ে হাজির হচ্ছেন বামেদের হয়ে বিধানসভায় ভোটে লড়া সিপিআইএম নেতা।

১৫ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে (SRFTI) হচ্ছে ‘বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’। উদ্যোক্তা দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভানেত্রী সংঘমিত্রা চৌধুরীর সংগঠন ‘বাংলা আবার’। বিজেপি নেত্রীর উদ্যোগ বলেই হয়ত কেন্দ্রের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এবং এনএফডিসি-ও এই উৎসবে শামিল হয়েছে। উৎসবে চার দিনে ১০টি পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি, শিশুদের জন্য তৈরি ২৫টি ছবি দেখানো হবে। কিন্তু যে যে ছবি দেখানো হবে সেখানে ‘স্বতন্ত্র বীর সাভারকর’ বা ‘দ্য সবরমতী রিপোর্ট’-এর মতো ছবি পাশাপাশি তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে দেবদূত ঘোষের নির্দেশিত ছবি ‘আদর’ও।

এই খবর নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, যে সাভারকরকে সবসময় সমালোচনা এবং আক্রমণ করে সিপিএম, তাঁর মহিমা প্রচারের ছবি বা গুজরাটের ২০০২ সালের হিংসা নিয়ে বামেদের মতের বিপরীত মত নিয়ে তৈরি ছবির সঙ্গে ‘আদর’-এর মতো ছবি নিয়ে আসতে অস্বস্তি হচ্ছে না দেবদূতের? এসব সমালোচনায় কান দিচ্ছেন না সিপিএম নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘শিল্পে বা চলচ্চিত্রে কোনও ভাগাভাগি হয় বলে আমি বিশ্বাস করি না। বিজেপি সমর্থক, আরএসএস সমর্থক, তৃণমূল সমর্থক, সিপিএম সমর্থকের জন্য আলাদা আলাদা ছবি হয় না। ছবি সকলের জন‍্য। আমি শুধু বামপন্থী দর্শকের জন‍্য ছবি বানাব বা কেউ শুধু বিজেপি সমর্থকদের জন‍্য ছবি বানাবেন, এমন হয় না। ছবি সকলের জন‍্য বানানো হবে এবং সব রকমের ছবিই উৎসবে আসবে। দর্শক বেছে নেবেন, কোনটা দেখবেন, কোনটা পছন্দ করবেন।’’

সেটাই যদি মনে করেন, তাহলে বাম আমলে ব্রাত্য বসুর ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’-এর প্রদর্শন কেন আটকে দেওয়া হয়? অর্পিতা ঘোষের ‘পশুখামার’ কেন প্রদর্শনের অনুমতি পাইনি? এই বিষয়ে কিছুটা ডিপ্লোম্যাটিক উত্তর অভিনেতা-পরিচালক দেবদূতের। ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’ নিয়ে কোন মন্তব্য না করলেও, অর্পিতা ঘোষের নাটকটি নির্বাচনী বিধির কারণে আটকে গিয়েছিল বলে জানাচ্ছেন দেবদূত। এক্ষেত্রে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অত্যন্ত উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন বলেও দাবি সিপিএম নেতার।

এখানেই থেমে না থেকে দেবদূতের বক্তব্য, টলিউডের স্বার্থে ভাগাভাগি বন্ধ হওয়া উচিত। আর সেখানেই বামের স্বর মিলে যাচ্ছে রামের সঙ্গে। কারণ বিজেপি নেত্রী সংঘমিত্রাও মনে করেন, টালিগঞ্জে এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতি, তাতে বাংলা ছবির, টেলিভিশনের স্বার্থে সবার এক হওয়া দরকার।

তা হলে কি টলিগঞ্জের বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘোলা জলে মাছ ধরতে তলায় তলায় হাত মেলাচ্ছে বাম-বিজেপি? আর তার ফলেই বিজেপি নেত্রীর উদ্যোগে আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান পেয়েছে দেবদূতের ছবি? এই প্রশ্নেই এখন সরগরম টলিপাড়া।

আরও পড়ুন- তৎপর রাজ্য! ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণে ফের বৈঠকে বসছেন সেচমন্ত্রী-সাংসদ দেব

_

 

_

 

_

 

_

 

_