কৃষকের সার নিয়েও মিথ্যা তথ্য! কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের পর্দাফাঁস কীর্তি আজাদের

0
3

গোটা দেশে প্রয়োজনীয় সারের সরবরাহ করেও উদ্বৃত্ত রয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের ভাণ্ডারে। কৃষি মন্ত্রকের এই তথ্যের পরই মোদি সরকারের মিথ্যাচারের পর্দাফাঁস করলেন তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ (Kirti Azad)। কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক (Ministry of Agriculture and Farmers’ Welfare) বিভ্রান্তিকর তথ্য পেশ করছে রাসায়নিক ও সার (chemicals and fertilizers) বিষয়ক সংসদীয় কমিটির (Parliamentary Standing Committee) সদস্য কীর্তিকেও, অভিযোগ করেন সাংসদ। একদিকে যখন বাংলা সহ একাধিক রাজ্য প্রাপ্য রাসায়নিক সার পাচ্ছে না, সেখানে কৃষি মন্ত্রক তথ্য দিয়ে জানাচ্ছে তারা দাবি অনুযায়ী সার সরবরাহ করেও উদ্বৃত্ত সার মজুত রাখতে সক্ষম হয়েছে। মিথ্যাচারের পালা এতদিন পর্যন্ত মোদির সরকারের মন্ত্রী, নেতাদের ভাষণে সীমাবদ্ধ ছিল। এবার তা লিখিত তথ্যেও চলে এসেছে, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন কীর্তি আজাদ। এমনিতেও কেন্দ্রীয় বাজেটে (Union Budget 2025) বঞ্চিত শ্রেণির মধ্যে অন্যতম দেশের কৃষকরা। তারই মধ্যে কীভাবে কৃষি দফতর তথ্য পেশে মিথ্যা ছড়াচ্ছে, তা তুলে ধরলেন তৃণমূল সাংসদ।

বাংলার তথ্য তুলে ধরে তৃণমূলের বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সাংসদ জানান, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বাংলা থেকে ডাই-অ্যামোনিয়ান ফসফেটের (DAP) যে পরিমাণ দাবি জানানো হয় কেন্দ্রের কাছে তার তিন ভাগের এক ভাগ বরাদ্দ করা হয়। বাংলা পায় ৫৭,৫১০ মেট্রিক টন। একইভাবে ২ লক্ষ মেট্রিক টন এনপিকে (NPK) দাবি করা হলে বাংলাকে বরাদ্দ করা হয় ১.৬ লক্ষ মেট্রিক টন। শুধুমাত্র বাংলা নয়, সাংসদের দাবি, একইভাবে বঞ্চিত একাধিক রাজ্য। তারাও কেন্দ্রের কৃষি মন্ত্রককে চিঠি দিয়ে বকেয়া সারের দাবি জানিয়েছেন।

ঠিক এই তথ্যের পাল্টা মিথ্যা তথ্য সংসদের রাসায়নিক ও সার বিষয়ক কমিটির সদস্য কীর্তি আজাদের (Kirti Azad) প্রশ্নের উত্তরে জানায় কৃষি মন্ত্রক। তার জানায়, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে গোটা দেশের সারের (chemical fertilizer) চাহিদা ছিল ৩৫.৫২ লক্ষ মেট্রিক টন। তার তুলনায় কেন্দ্রের কাছে মজুত সার ছিল ৩৮.২৭ লক্ষ মেট্রিক টন। ফলে বছর শেষে সব রাজ্যকে সরবরাহ করে কেন্দ্রের কাছে উদ্বৃত্ত (closing stock) থাকে ৯.০৫ মেট্রিক টন। সেখানেই পর্দাফাঁস কেন্দ্রের মিথ্যাচারী সরকারের। বাংলার ক্ষেত্রেই দাবি ও বরাদ্দের বিস্তর তফাৎ। অন্যান্য অনেক রাজ্য়ই দাবি অনুযায়ী প্রাপ্য পায়নি। সেখানে কৃষি মন্ত্রক দাবি করছে তারা দাবি পূরণ করেও উদ্বৃত্ত রাখতে পেরেছেন।

তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ কেন্দ্রের এই কৃষক-বিরোধী নীতিকে তুলে ধরে স্পষ্ট দাবি করেন, একদিকে কেন্দ্রের কৃষিনীতিতে হয়রান দেশের কৃষকরা। সেখানে সামান্য প্রাপ্য সারটুকুর জন্য লাইন দিয়ে মারামারি করে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে দেশের অন্যতম মূলস্তম্ভ কৃষকদের। বাংলায় প্রায় ২০ লক্ষ মেট্রিক টন সার (chemical fertilizer) উৎপাদিত হয়। ফলে বাংলা নিজের চাহিদা অনেকাংশে মিটিয়ে ফেলতেই পারে। কিন্তু যে রাজ্যগুলিতে সার উৎপাদিত হয় না, তাদের প্রাপ্য না মেলায় আরও কত হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে, আশঙ্কা প্রকাশ করেন সংসদের রাসায়নিক ও সার বিষয়ক কমিটির (Parliamentary Standing Committee) সদস্য কীর্তি।