বারবার রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাকরিপ্রার্থীদের যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রাপ্ত চাকরি রক্ষা করতে তৎপর হলেও সেখানেই বাধা বাম আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের। এমনকি শীর্ষ আদালত যেখানে যোগ্য-অযোগ্য চাকরিপ্রার্থী আলাদা করে চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি রক্ষার সপক্ষে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে, সেখানেও বাম আইনজীবীরা দাবি করেছেন যোগ্য-অযোগ্য বাছাই সম্ভব নয় বলে। এমনকি বারবার অযোগ্যর সংখ্যা গুলিয়ে দিয়ে মামলাকে জটিল করার চেষ্টা করলেন তিনি। সোমবারের সুপ্রিম শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখল প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না (CJI Sanjeev Khanna) ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।
এসএসসি চাকরি বাতিল মামলার শেষ শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চ যোগ্য-অযোগ্য (tainted-untainted) বিচার সম্ভব কিনা, তার উত্তর চেয়েছিল। সোমবার সেই শুনানিতে সিবিআই-এর (CBI) পক্ষে আইনজীবী জানান, স্ক্যানটেক ও পঙ্কজ বনসলের থেকে পাওয়া তথ্য মিলে গিয়েছে। এমনকি তারিখ মিলিয়ে সেই তথ্য যে এক সেই তথ্য পেশ করেন সিবিআই-এর আইনজীবী।
সেই সঙ্গে রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সাংভি পেশ করেন, যোগ্য-অযোগ্য (tainted-untainted) বাছাই রাজ্যের পক্ষ থেকে তথ্য দিয়ে করা হয়েছে। তিনটি মামলায় এই বাছাই মানা হচ্ছে না। এখানেই স্পষ্ট তথ্য প্রমাণের ধার না ধারা বামেরা যে কোনও মূল্যে গোটা প্যানেল বাতিলেই তৎপর।
সিবিআই তদন্ত ও চার্জশিট পেশ নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন। যদিও তারা যোগ্য-অযোগ্য প্রার্থী বাছাই সম্ভব বলে তাঁরা তথ্য পেশ করেন। এসএসসির আইনজীবী প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে জানান, নিয়োগ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার চাকরিপ্রার্থীর। এর মধ্যে এসএসসি (SSC) দুটি ভাগে ভাগ করে চাকরিপ্রার্থীদের – ব়্যাঙ্ক জাম্প করা ও প্যানেল বহির্ভূত। এর বিস্তারিত তালিকা প্রধান বিচারপতির (CJI Sanjeev Khanna) প্রশ্নের উত্তরে পেশও করেন এসএসসির আইনজীবী। আবার ওএমআর না মেলার তথ্য প্রমাণ সহ তালিকা পেশ করে সিবিআই (CBI)।
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি রক্ষার জন্য দ্বারস্থ হতেই ডিভিশন বেঞ্চ হাইকোর্টের চাকরি বাতিল রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। সেই শুনানির প্রসঙ্গ তুলে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষের আইনজীবী এদিন সওয়াল করেন, নিরপরাধ চাকরিপ্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন না, এই পর্যবেক্ষণ একসময় আদালত করেছিল। এরপরই প্রশ্ন ওঠে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ নিয়েও, যেখানে গোটা প্যানেল বাতিলে উল্লাস করেছিল বামেরা। প্রশ্ন তোলা হয়, হাইকোর্টে ইলেক্ট্রনিক প্রমাণের (electronic data) সঙ্গে ৬৫বি প্রমাণ মিলিয়ে দেখা হয়নি। গোটা শুনানি শেষে সবপক্ষের তালিকা ও তথ্য জমা নেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রায়দান স্থগিত রাখা হয়।
সোমবারও শীর্ষ আদালতে বামেদের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ রাজ্যের শাসকদলের। এসএসসি-কে (SSC) ইস্যু করে একশ্রেণির রাজ্যবাসীকে নিজেদের ভোটার হিসাবে রাখতে চাইছে বিরোধী বামেরা, দাবি তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি, যাঁরা যোগ্য তাঁদের একজনেরও যেন চাকরি না যায়। বিরোধীরা চাইছে গোটা প্যানেল বাতিলের নামে যোগ্যদেরও চাকরি বাতিল করতে। সুপ্রিম কোর্টে এরা চাইছে কর্মপ্রার্থীদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করে রাখতে।
–
–
–
–
–