গত ৩ ফেব্রুয়ারি, সরস্বতী পুজোর দিন, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ‘বেলা সাহা স্মৃতি বিদ্যা মন্দির’ নামে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরজা পড়ুয়াদের জন্য খুলে দেওয়া হল।এটি শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স-এর আরেকটি সিএসআর উদ্যোগ,। এই স্কুলের নামকরণ এমন একজনের নামে করা হয়েছে, যিনি তার জীবদ্দশায় শিক্ষার মানোন্নয়নে সচেষ্ট ছিলেন। তার অনুগামীদের তিনি নিরন্তর অনুপ্রাণিত করে গিয়েছেন।
এবছর সরস্বতী পুজোর দিন বাগদেবীর কাছে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে এই নতুন স্কুলের যাত্রা শুরু হয়। এই উপলক্ষে পায়রা ওড়ানো হয় এবং স্কুলের পতাকা উত্তোলন করে নতুন পথ চলার অঙ্গীকার করা হয়।উদ্বোধন করেন স্বামী সুপর্ণানন্দ জি মহারাজ, অধ্যক্ষ্য, ইনস্টিটিউট অফ কালচার, রামকৃষ্ণ মিশন, গোলপার্ক, কলকাতা। জুপিটার ওয়াগনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সভাপতি এম এল লোহিয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।এছাড়াও সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের দেবব্রত সরকার, কলকাতার গোয়েঙ্কা কলেজ অফ কমার্সের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত ড. সুজিত রায়, বিশ্বযোগ-এর যোগীবিশ্ব, সুন্দরবন বিনোদপুর শিবম সোসাইটির সচিব ড: দীপঙ্কর মণ্ডল প্রমুখ।
এই প্রসঙ্গে এম এল লোহিয়া বলেন, এক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সাহা পরিবার এই স্কুলটির দায়িত্ব নিয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগে অংশীদার হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আগামী দিনেও এইভাবে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিলাম। এম এল লোহিয়া, একজন সফল উদ্যোগপতি যিনি জীবনে তার লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকে সফলতার শীর্ষে উঠেছেন। তাই তিনি ছোট শিক্ষার্থীদের জন্য একজন আদর্শ রোল মডেল।
স্বামী সুপর্ণানন্দ জি মহারাজ বলেন, এই পরিবার সর্বদা সমাজের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের আরেকটি মহৎ উদ্যোগে আমি এখানে উপস্থিত হতে পেরে আনন্দিত।তিনি আরও বলেন, আমি এম এল লোহিয়াকে আশীর্বাদ করছি যিনি সারা বছর ধরে স্কুলের ৩৫০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব নিয়েছেন। সেইসঙ্গে অভিনন্দন জানাই সুন্দরবন বিনোদপুর শিবম সোসাইটিকে যারা এই বিদ্যা মন্দিরটি পরিচালনা করবেন।
বেলা সাহার একমাত্র ছেলে, শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্সের ডিরেক্টর রূপক সাহা বলেন, আমার মা বেলা সাহা সত্যিই শিক্ষার অগ্রগতিতে সচেষ্ট ছিলেন, যা তাকে শিক্ষাক্ষেত্রে শীর্ষে পৌঁছতে সাহায্য করেছিল।নিজের স্কুল জীবনে তিনি শীর্ষস্থান অধিকার করতেন। এরপর কলেজের পড়াশোনা শুরু করেন বিয়ের আঠারো বছর পরে | ডিস্টিংশন পেয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। মা সবসময় মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত ছিলেন। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল, ত্রিপুরার প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রী মুন সূত্রধর। যিনি নিউ দিল্লির মিরান্ডা হাউসে তাঁর সহপাঠীদের পিছনে ফেলে নিজের স্বপ্নপূরণ করেছিলেন ও বর্তমানে লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে নিজের সুযোগ করে নিয়েছে ।’বেলা সাহা সত্যিই অনেকের কাছে মাতৃতুল্য ছিলেন, যারা তাঁর ভালোবাসা ও স্নেহ পেয়েছে, বিশেষ করে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য,’ বলেন মেয়ে সুচরিতা রায়। তিনি আরও বলেন, “মায়ের স্মৃতিতে নামকরণ করা এই স্কুলের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তাই আমরা চেষ্টা করব এমনভাবে এই স্কুলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যাতে ‘বেলা সাহা স্মৃতি বিদ্যা মন্দির’ নামের সার্থকতা বজায় থাকে।”
–
–
–
–
–
–
–