সোনার হরিণ বাজেট! আয়কর ছাড় নিয়ে কেন্দ্রীয় বাজেটের আসল রূপ দেখালেন অভিষেক

0
1

কেন্দ্রীয় বাজেট (Union Budget 2025) পেশ করে নিজেরাই নিজেদের পিঠ চাপড়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী। লোকসভা থেকে রাজ্যসভায় দেশের অর্থনীতিকে দিশা দেখাতে কোনও বার্তা দিতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কার্যত বাজেট পেশ করে যে দেশের সাধারণ মানুষকে সোনার হরিণের লোভ দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman) তা লোকসভায় দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আর এই সোনার হরিণের সবথেকে বড় উদাহরণ আয়কর ছাড়ের ঘোষণা।

লোকসভায় বাজেট নিয়ে জবাবি ভাষণে তৃণমূল সাংসদ অভিষেকের দাবি, ২০২৫ সালের বাজেট মরিচিকার থেকেও বড়। এটি রামায়ণের (The Ramayana) সোনার হরিণের (Golden Deer) মতো। এই বাজেটে কেন্দ্রের সরকারের পক্ষ থেকে মারিচের মতো মুহূর্ত তুলে ধরা হয়েছে সাধারণ মানুষের সামনে। যেভাবে সীতাকে লক্ষ্ণণ রেখা থেকে বাইরে বের করে আনতে মারিচ সোনার হরিণ সেজেছিল, সেভাবেই চকচকে বাজেট পেশ হয়েছে যেখানে সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে অথচ অর্থনীতির বিপর্যয়ের লুকিয়ে রাখা হয়েছে।

বর্তমান ভারতীয়দের পরিস্থিতির বাস্তবতা ও বাজেটের তফাৎ তুলে ধরতে অভিষেক ব্যাখ্যা করেন, ট্যাক্সে ছাড় (tax relaxation), অর্থনৈতিক বৃদ্ধি (economic growth) ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নের (infrastructural development) বার্তা দিয়ে জমকালো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এই বাজেটে। যেখানে লুকিয়ে রাখা হয়েছে পরোক্ষ কর, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি, জনগণের ক্রয়ক্ষমতায় কোপ এবং শেষ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্পোরেট সংস্থাকে ছাড়ের তত্ত্বগুলি।

এই সোনার হরিণের সবথেকে বড় মায়া হিসাবে অভিষেক তুলে ধরেন চাকুরিজীবীদের কর ছাড়ের প্রতিশ্রুতিকে। লোকসভায় তিনি বলেন, এই সরকার গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছে বছরে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্যনে কোনও আয়কর দিতে হবে না। করে ছাড় দিয়ে যে রাজস্ব ঘাটতি তা ঘুরপথে তুলে নেওয়া হবে তেলের দাম (oil price) বাড়িয়ে, পরিষেবা কর (service tax) বাড়িয়ে, দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসে লুকানো কর লাগু করে সেই টাকা তুলে নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষ এই মোড়ক থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও বিজেপির প্রোপাগান্ডা ও জনসংযোগ মাধ্যমগুলি দিয়ে সাধারণ মানুষকে এই সোনার হরিণের পিছনে ছুটতে বাধ্য করা হবে। যখন সাধারণ মানুষ এই সোনার হরিণের আসল মুখোশ খুলে স্বরূপ বুঝতে পারবেন, ততদিনে তাঁদের সব অর্থ পুঁজিবাদের হাতে চলে যাবে।

নরেন্দ্র মোদির ভ্রান্ত কর নীতিতে কীভাবে করের তলায় পিষ্ট ভারতীয়রা, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অভিষেক বলেন, ভারতীয় হিসাবে আমাদের সেই সব দ্রব্যে কর দিতে হয় যা আমরা কিনি। আবার সেই জিনিসেও কর দিতে হয় যা আমরা বিক্রি করি। আবার কর দেওয়া উপার্জনের অর্থ দিয়ে আবার জিনিস কিনি যখন তখনও নতুন করে কর দিই।