ঔপনিবেশিক আমলের গোধূলিবেলা থেকে খনি অর্থনীতিতে প্রবেশ রাঢ়বঙ্গের। সেই ধারাবিবরণীর মনোগ্রাহী ছবি উঠে এসেছে বীরেন্দ্রকুমার বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের আত্মজীবনীতে (autobiography)। শুক্রবার কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিত হল ‘পায়ে পায়ে পাঁচালি: রাঢ়বাংলার একটি গ্রামের আত্মকথা’। দেশভাগের অশান্তি থেকে খানিকটা দূরে সদ্য শিল্পের সন্ধানে জেগে ওঠা রাঢ় বাংলা সম্পূর্ণভাবে আলাদা যে বাস্তুতন্ত্র গড়ে তুলছিল, তারই কাহিনী নিজের মধ্যে আমৃত্যু লালিত ‘অপু’র মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছেন লেখক বীরেন্দ্রকুমার।
দেশভাগের রক্তক্ষয়ী ইতিহাসের সাক্ষী থাকার পাশাপাশি তিনি সাক্ষী থেকেছেন অপুষ্টি, ১৯৫০-এর মন্বন্তরের। আবার রাঢ়বঙ্গে এসে প্রত্যক্ষ করেছেন সেই রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে অপেক্ষাকৃত নিজেদের বাঁচিয়ে রাখা দক্ষিণ-পশ্চিমের রাঢ়বাংলা (Rarh Bengal)। সেই সময়ের ক্রমশ অগ্রসরমান বাংলার সঙ্গে তুলনায় কম প্রচার পাওয়া ও একাকী হয়ে পড়ার কারণেই হয়তো এই রাঢ়ভূমির কৃষ্টি, সংস্কৃতি, প্রথা ও জনপ্রিয় লোককথা গুলি দীর্ঘদিন পর্যন্ত একই রকম রয়ে গিয়েছে। আর সেই বর্ণনা উঠে এসেছে ‘পায়ে পায়ে পাঁচালি’-র বর্ণনায়।
লেখকের পুত্র তথা রাজ্যের প্রাক্তন আমলা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Alapan Bandyopadhyay) বর্ণনায়, এই বই শুধুমাত্রই বীরেন্দ্রকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মজীবনী নয়। এটি ঐতিহাসিক দলিলের এক রূপ। সেখানে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংঘাতের সময়োচিত বর্ণনা রয়েছে। রাঢ় বঙ্গের পল্লীজীবনের আন্তঃদ্বন্দ্বের ঐতিহাসিক সাক্ষ্য বহন করে এই বই।
শুক্রবার দীপ প্রকাশনের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ করে এই আত্মজীবনী। বইটি নিয়ে আলোচনা করেন সাহিত্যিক অমর মিত্র, যিনি লেখকের ব্যক্তিগত বন্ধুও ছিলেন। বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক প্রচেত গুপ্ত, বিনতা রায়চৌধুরি, ভগীরথ মিশ্র।
–
–
–
–
–
–
–