পৃথিবীর বুকে ভারতে বসন্ত আসতে এখনও বাকি। বিশ্বের সিংহভাগই প্রহর গুনছে বসন্ত আগমনের। তবে পৃথিবীতে বসন্ত জাগ্রত হওয়ার আগেই মঙ্গলগ্রহে (Mars) বসন্ত এসে গেছে। মঙ্গলের দক্ষিণ মেরুর (south pole) একটি দৃশ্যই তা স্পষ্ট করে দিয়েছে।
পৃথিবীর মতো মঙ্গল গ্রহেও ঋতু পরিবর্তন (weather change) হয়। শীতে বরফ জমে। গ্রীষ্মে আবার সেই বরফ গলে যায়। তেমনি শীত পেরিয়ে বসন্তের আগমনে গলতে শুরু করেছে মঙ্গলের বরফ। তবে এই বরফ জল থেকে নয়, হয় কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে। মঙ্গলের বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের (CO2) প্রবল দাপট। সেই কার্বন ডাই অক্সাইডই শীত এলে জমে যায় লাল গ্রহে। আর এই প্রবণতা বেশি দেখা যায় মঙ্গলের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে।
শীত এলেই মঙ্গলের (Mars) লালচে পাথুরে মাটির ওপর একটি স্তর পড়তে শুরু করে। তা হল কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে তৈরি ড্রাই আইসের স্তর। সেই সময় মঙ্গলের চেনা লাল মাটি দেখা যায় না। মাটির উপরে স্তর পড়ে মঙ্গলের সে এক অন্য চেহারা। আবার বসন্ত এলেই সেই বরফ গলে পুরনো চেহারা ফিরে পায় লাল গ্রহ। এই পরিবর্তন প্রতি বছর লক্ষণীয় হয়। সম্প্রতি নাসার (NASA) রিকনসেন্স অরবিটার একটি ছবি পাঠিয়েছে। সেই ছবিতেই দেখা যাচ্ছে চমকপ্রদ ঘটনা। বরফের স্তরের কিছু কিছু জায়গা থেকে ফোয়ারার (fountain) মতো বেরিয়ে আসছে গ্যাস আর ধুলো। উপরের আবরণ সরিয়ে স্বচ্ছ হয়ে উঠছে মঙ্গলের মাটি। তা দেখেই বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন বসন্ত এসে গিয়েছে লাল গ্রহে। পৃথিবীর আগেই বসন্তের সেই শুভাগমন।
নাসার (NASA) বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, সূর্যের তাপ যখন প্রখর হতে শুরু করে, তখন স্বচ্ছ বরফের স্তর ভেদ করে সূর্যালোক পৌঁছে যায় মঙ্গলের মাটিতে। মাটি তাতে গরম হয়।
সেই উত্তাপ ওই কার্বন ডাই অক্সাইডের তৈরি ড্রাই আইস (dry ice) গলতে থাকে। বরফ গলে যেমন জল হয়, ড্রাই আইস গলে কিন্তু জল তৈরি হয় না, তৈরি হয় গ্যাস। সেই গ্যাসই ফোয়ারার মতো বেরিয়ে আসতে থাকে। মঙ্গলের বুকে এ এক অনিন্দ্য সুন্দর দৃশ্য।