একদিকে প্রকাশ্যে এসেছে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই মাইকে ঘোষণা করে মৌনী অমাবস্যার মধ্যরাতে পুণ্যার্থীদের কৃত্রিম ভোগান্তিতে ফেলেছিল যোগী রাজ্যের প্রশাসনই। অন্যদিকে মধ্যরাতে পদপিষ্টের ঘটনার পরেও ভোরে ফের একই পরিস্থিতি হয়েছিল সেক্টর ২১-এর ঝুসিতে (Jhusi)। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে ২৮টি অস্থায়ী সেতুর (poontoon bridge) মধ্যে কেন মাত্র একটি খুলে রেখে সাধারণ মানুষকে পদপিষ্ট (stampede) হওয়ার পথে বাধ্য করেছিল যোগী প্রশাসন। প্রথম থেকেই মৃতের সংখ্যা গোপণ করে ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করেছে ডবল ইঞ্জিন সরকার। তা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত বাংলার ৫ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে।
মৌনী অমাবস্যায় প্রয়াগরাজে (Prayagraj) শাহি-স্নান করতে গিয়ে পদপিষ্টের ঘটনায় ৩০ জনের মৃত্যুর দাবি করেছে যোগী প্রশাসন। সেই সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কার্যত সেই বার্তাকেই সমর্থন করছে প্রয়াগরাজের আরও দুই ঘটনা। যেখানে দেখা যাচ্ছে সেই রাতে সঙ্গম এলাকা (Sangam nose) ছাড়াও দুটি জায়গায় বহু মানুষ পদপিষ্ট (stampede) হয়েছেন।
মধ্যরাতে সঙ্গম এলাকায় পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পরে একই পরিস্থিত তৈরি হয় ২ কিমি দূরে ঝুসি (Jhusi) এলাকায়। সম্প্রতি সেখানকার কিছু ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে যাতে স্পষ্ট সেখানেই বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে। একটি জলসত্র চালানো সংস্থা জানাচ্ছে অন্তত ৪০টি শিশুকে তাঁরা আশ্রয় দিয়েছিলেন। ভোর ৬টা নাগাদ এত ভিড় হয়ে যায়, মানুষ তাঁদের কাছে আশ্রয় চান। শেষে নিজেদের সন্তানদের বাঁচাতে সেখানে আশ্রয় দিতে অনুরোধ করেন। পরে আরও একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ঝুসি (Jhusi) এলাকা থেকে চটি-জুতো, জলের বোতল ট্রাক্টরে করে সরানো হচ্ছে। একাংশের পুণ্যার্থীদের দাবি, মধ্যরাতের পদপিষ্টের (stampede) ঘটনা গোপণ করায় ঝুসি এলাকার পুণ্যার্থীরাও সতর্ক হতে পারেনি। সেখানে প্রশাসনও ঢিলেঢালা মনোভাব দেখিয়েছিল।
পাশাপাশি আরও একটি ছবি উঠে এসেছে একটু পুনটুন ব্রিজ (poontoon bridge) থেকে। পুণ্যস্নানের জন্য নদীতে ২৮টি অস্থায়ী ব্রিজ তৈরি করা হয়। অভিযোগ, তার মধ্যে মাত্র ১টি ব্রিজ শাহি-স্নানের দিন সকালে খোলা ছিল সাধারণ মানুষের জন্য। মধ্যরাতে মর্মান্তিক ঘটনার পরেও কোটি কোটি সাধারণ পুণ্যার্থীর সুবিধার্থে কোনও বিশেষ পদক্ষেপ যে নেওয়া হয়নি, যাত্রাপথ পরিচালনাতেও তা পরিষ্কার। সেই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে, ভিআইপি (VIP) পুণ্যার্থীদের জন্য বেশিরভাগ পুনটুন ব্রিজ বন্ধ রেখে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ তৈরি করেছিল উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের পাঁচজনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। এখনও বহু পুণ্যার্থী প্রয়াগরাজের পথে রয়েছেন, যাঁরা মৌনী অমাবস্যার পদপিষ্টের (stampede) ঘটনা জানেন না বলেও জানান। ফলে এখনও মহাকুম্ভের পথে রয়েছেন তাঁরা। কলকাতার অশ্বিনীনগরের বাসন্তী পোদ্দার ও পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির ঊর্মিলা ভুঁইয়ার মৃত্যুর পরে প্রকাশ্যে এসেছে মালদহের প্রাথমিক শিক্ষক অমিয় সাহার মৃত্যুর খবর। পরে জানা যায় পশ্চিম বর্ধমানের বিনোদ রুইদাসের মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছায় তাঁর বাড়িতে। অভিযোগ, সেখানে কোনও ডেথ সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকার করে যোগী প্রশাসন। সর্বশেষে খবর আসে রামপুরহাটের বৃদ্ধা গায়ত্রী দে-র মৃত্যুর খবর। পরিবারের কাছে ছবি পাঠিয়ে সেই খবর দেওয়া হয়।
–
–
–
–
–
–