মৌনী অমাবস্যায় মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। কাঠগড়ায় আদিত্যনাথের প্রশাসন। কেন্দ্রের কাছ থেকে ‘জাতীয় মেলা’র তকমা পাওয়া কুম্ভ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ যোগী সরকার(Yogi Adityanath Government)। আখড়াগুলি শাহি স্নান বন্ধের কথা ঘোষণা করতেই, গুজবের নামে দায় চাপিয়ে পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর (CM of Uttarpradesh)। পাশাপাশি মানুষের মৃত্যুকে গুরুত্ব না দিয়ে, দুর্ঘটনা এড়াতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরিবর্তে, ফের ‘গা জোয়ারি’ করে অমৃতস্নান চালুর ঘোষণা বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে।
মহাকুম্ভের পুণ্যস্থানে কোটি কোটি মানুষের সমাগম অথচ তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পরিকল্পনা এবং পরিকাঠামো তৈরি করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ আদিত্যনাথ প্রশাসন। সরকারি তরফে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় মৃতের তালিকা প্রকাশ করা না হলেও , অসমর্থিত সূত্রের খবর অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে গুরুতর আহত প্রায় ৪০-এর কাছাকাছি। এই দুই সংখ্যাটাই বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা উদ্ধারকর্মীদের। যদিও এই সংক্রান্ত কোনও তথ্যই প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ। উল্টে মঙ্গলবার রাত দুটো নাগাদ যে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার দায় স্বীকার করার পরিবর্তে বুধবার সকাল থেকে ফের ভিড়ের মাঝেই শাহিস্নান চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মহাকুম্ভে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর স্নানপর্ব বন্ধ রাখার বার্তা দেয় আখড়া পরিষদ। এরপরই মোদি এবং শাহের কাছ থেকে ফোন পেয়ে তড়িঘড়ি আখড়ার সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন আদিত্যনাথ। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে এটা স্পষ্ট যে মানুষের জীবনের কোনও মূল্য নেই এই সরকারের কাছে। মৌনী অমাবস্যার ‘অমৃতস্নান’ উপলক্ষে বুধবার মধ্যরাত থেকে ভিড় বাড়তে থাকে ঘাটে ঘাটে। ১১ থেকে ১৭ নম্বর খুঁটির মাঝে ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে যায়। যার জেরে পদপিষ্ট হন বহু মানুষ। আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুণ্যার্থীদের মধ্যে। সকালেও চলছে উদ্ধারকাজ।
কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য ছাড়া বাংলার বুকে গঙ্গাসাগর মেলার মতো বিরাট আয়োজনে একটা ছোট দুর্ঘটনার খবরও মেলেনি। অত্যন্ত সুশৃংখলভাবে পরিচালিত হয়েছে সবটা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং প্রশাসন যেভাবে সাগরে পুণ্য স্নানে অংশ নেওয়া ভক্তদের পরিষেবা দিয়েছে, সামান্য অসুস্থ হলেও যেভাবে দ্রুত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করা হয়েছে তার প্রশংসা করেছেন ভিন রাজ্য থেকে আসা বহু মানুষ এমনকি বিদেশি ভক্তরাও। যোগীরাজ্য থেকে আগত সন্ন্যাসীরাও গঙ্গাসাগরের ব্যবস্থাপনায় অভিভূত। অথচ বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে মহাকুম্ভ আয়োজনের চূড়ান্ত ব্যর্থ বিজেপি সরকার। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং পরিকাঠামগত অব্যবস্থার পরিচয় দেয়। কখনও অগ্নিকাণ্ড কখনও বা পদপিষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো একাধিক ঘটনা প্রমাণ করে দিচ্ছে মহাকুম্ভ মেলার আয়োজনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ এবং বিজেপি প্রশাসন।
–
–
–
–
–
–
–
–