হাত-পা ভেঙে ৬ বছরের শিশুকে নারকীয় অত্যাচার, জালে মা-সৎ বাবার!

0
2

বেনজির অত্যাচার। নিজেদের সুখের জন্য   মাত্র ছয় বছরের শিশুকে বেধড়ক মারধর করে হাত ভেঙে দিল মা ও সৎ বাবা। ছেঁকা দেওয়া হয়েছে দেহের একাধিক জায়গায়। বেধড়ক মারে জ্ঞান হারিয়ে যাওয়ার পর মৃত ভেবে দু কিলোমিটার দূরে ফাঁকা জঙ্গলে ফেলে পালাল গুণধর দম্পতি। এমনই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর থানার উত্তর হলদিয়া গ্রামে।

নৃশংস এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। মা ও সৎ বাবার কান্ড শুনে হতবাক স্থানীয়রাই। পরে তারাই পুলিশের হাতে তুলে দেয় অভিযুক্তদের। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত দুইজন হলেন মামনি গিরি ও শুকদেব মন্ডল। গত পাঁচ বছর আগে মামনির প্রথম স্বামী কার্তিক গিরির পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। এরপর উত্তর হলদিয়া গ্রামের শুকদেব মন্ডলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মামণির। গত কয়েক মাস আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তারা। বর্তমানে মামনির প্রথম পক্ষের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। যার বয়স মাত্র ৬ বছর।

জানা গি্য়েছে, নতুন বিয়ে করার পর থেকেই তার ওপর প্রবল অত্যাচার নেমে আসছে। একপ্রকার দ্বিতীয় স্বামীর পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় ওই সন্তান। দিনের পর দিন বেধড়ক মারধর ও নৃশংস অত্যাচার চলে তার ওপর। গত সোমবার রাতে তাকে বেধড়ক মারধর করে দুই হাত ভেঙে দেয় মা ও তার সৎ বাবা। সিগারেটের ছেঁকা দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। ব্যাপক মারে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে শিশুটি। মা ও সৎ বাবা তাকে মৃত ভেবে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বনের মধ্যে ফেলে দিয়ে আসে। পরে সকালে জ্ঞান ফিরতে পাশের এক বাড়িতে গিয়ে জল খেতে চায় শিশুটি। এরপর তার গায়ের একাধিক ক্ষত থাকায় তাকে জিজ্ঞেস করে ওই বাড়ির সদস্যরা। পরে জানাজানি হতেই পাড়া-প্রতিবেশীরা দম্পতিকে গাছে বেধে গণপিটুনি দেয়। পরে রামনগর থানার পুলিশ গিয়ে গুণধর দম্পতিকে গ্রেফতার করে ও শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল পড়েছে এলাকায়।

গুণধর দম্পতির দাবি, আমরা ফেলে দিয়ে আসিনি। ও নিজে পালিয়ে গিয়েছিল। বুধবার তাদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হলে আদালত তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। রামনগর থানার ওসি অমিত দেব জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করেছি। কি কারণে এই ধরনের ঘটনা তদন্ত চলছে।