মোদি জমানার কঙ্কালসার চেহারা ফের প্রকট হয়ে পড়ল। বিজেপির মুখোশ খুলে গেল কেন্দ্রের রিপোর্টেই। আমি হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করি না, যেদিন করব সেদিন রাজনীতি ছেড়ে দেব বলে বাণী দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। কিন্তু কেন্দ্রের রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে, বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতেই বিভাজনের রাজনীতি বেশি। সিংহভাগ সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়েছে মোদি-যোগীদের রাজ্যেই। বিগত এক বছরে অর্থাৎ ২০২৪ সালে দেশে ৮৪ শতাংশ বেড়েছে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ। মোট ৫৯টি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ঘটেছে। তার মধ্যে ৪৯টিই বিজেপির রাজ্যে। সেন্টার ফর স্টাডি অফ সোসাইটি অ্যান্ড সেকুলারজিমের সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
রিপোর্টে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে সাম্প্রদয়িক সংঘর্ষ ঘটেছিল ৩২টি। ২০২৪ সালে তা এক লাফে বেড়ে ৫৯-এ পৌঁছে গিয়েছে এবার। ২০২৩-এর তুলনায় ২০২৪-এ ৮৪ শতাংশ বেড়েছে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ। এই সব ঘটনায় মোট ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, বাকি তিনজন হিন্দু। দেশে সবথেকে বেশি ধর্মীয় হিংসার ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। সেখানে রয়েছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন মহাযুতি সরকার। ২০২৪ সালে মোট ১২টি সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। দ্বিতীয় স্থানে যৌথভাবে রয়েছে বিহার ও উত্তরপ্রদেশ। বিহারে ‘দলবদলু’ নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। আর উত্তরপ্রদেশে তথাকথিত বিজেপির পোস্টার বয় যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনায় পিছিয়ে নেই মোদির সাধের গুজরাটও। যে রাজ্যকে মডেল বানিয়ে দেশকে বিশ্বগুরুতে পরিণত করার স্বপ্ন দেখেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, সেখানেও চরম অরাজকতা। ধর্মীয় বিভাজন ও সম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনায় বিজেপির মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ওড়িশা ও রাজস্থানও একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে।
এখানেই শেষ নয়, রিপোর্টে রয়েছে আরও চমকপ্রদ তথ্য। বছরের ৫৯টি সংঘর্ষের ঘটনার মধ্যে ২৬টি ঘটেছে কোনও না কোনও ধর্মীয় উৎসব বা ধর্মীয় মিছিলকে কেন্দ্র করে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পৃথক পৃথক চারটি হিংসার ঘটনা ঘটে। একইভাবে ফেব্রুয়ারিতে সরস্বতী প্রতিমার নিরঞ্জনকে কেন্দ্র করে ঘটে সাতটি সংঘর্ষের ঘটনা। এছাড়া গণেশ পুজোকে কেন্দ্র করে চারটি ও বকরি-ইদে দু’টি হিংসার ঘটনা ঘটে দেশে। মন্দির ও মসজিদের সমীক্ষা নিয়েও প্রায় ছ’টি হিংসার ঘটনা ঘটেছে এক বছরে।
এসব ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ বলে এবং কংগ্রেস জমানার ইতিহাস তুলে ধরে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে আর পারলেন না মোদি-শাহরা। বিজেপির আসল চেহারা বেরিয়ে পড়ল কেন্দ্রের রিপোর্টেই। ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ল বেড়াল।
আরও পড়ুন- হরিদেবপুরে মহিলা খুনে নয়া মোড়, নাম থেকে পরিচয়পত্র সবই ভুয়ো!
–
—
–
—
–
—
–
—
–