Exclusive: ‘বিনোদিনী’র শুটিং-এ একের পর এক অলৌকিক ঘটনা! জানালেন রুক্মিণী

0
1

পাঁচবছর ধরে একটা সিনেমার সঙ্গে যাপন করেছেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra)। থিয়েটার পাড়া থেকে গিরিশ ঘোষের বাড়ি, বিনোদিনী থিয়েটার থেকে বেলুড় মঠ- প্রকৃত অর্থেই বাংলা নাট্য জগতের কিংবদন্তির সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন নায়িকা। ‘বিনোদিনী একটি নটীর উপাখ্যান’ (Binodini Ekti Natir Upakhyan) মুক্তির আগে বিশ্ববাংলা সংবাদের (Biswabangla Sangbad) সঙ্গে একান্তে আড্ডা দিলেন অভিনেত্রী। সাংবাদিক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) সঙ্গে আলাপচারিতায় শুটিং চলাকালীন ঘটনা অলৌকিক ঘটনার কথা তুলে ধরলেন রুক্মিণী। কুণাল জানতে চান ‘বিনোদিনী’ চরিত্রে অভিনয়ের চ্যালেঞ্জ কতটা কঠিন ছিল? নায়িকা বলেন, “আমি বিনোদিনীকে বেছে নিইনি উনি নিজে আমাকে বেছেছেন।” ২০১৯ সালে পরিচালক রামকমল যখন রুক্মিণীকে বিনোদিনীর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তখন থেকেই তিনি জানতেন যে এই কাজটা সহজ নয়। তাঁর কথায়, “অভিনেত্রী হিসেবে আর কিছু থাক বা না থাক আমার সাহস আছে। জীবন শিখিয়েছে হেরে গেলেও হাল ছাড়া যাবে না।” এই সিনেমার শুটিং চলাকালীন সত্যিই শ্রীরামকৃষ্ণ ভাবাবেগ উপলব্ধি করেন নায়িকা আর সাক্ষী হন একাধিক অলৌকিক ঘটনার।

বিশ্ববাংলা সংবাদের (Biswabangla Sangbad) সঙ্গে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে রুক্মিণী বলেন তাঁর শর্ত ছিল, রামকৃষ্ণ পরমহংসের চরিত্রের সঙ্গে যেভাবে শুটিং এগোবে সেটা একেবারে সিনেমার সিকোয়েন্সের সঙ্গে মিলিয়ে হওয়া চাই। এবং সেই শুটিং চলাকালীন এক বিশেষ অনুভূতির অভিজ্ঞতা কুণালের সঙ্গে ভাগ করে নেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, “আমি অনেক গল্পে শুনেছিলাম যে বিনোদিনী যখন চৈতন্য রূপে অভিনয় করতেন তখন ওনার ভীষণ শরীর খারাপ হয়ে যেত। সেদিন যখন আমি ওই দৃশ্য শুটিং করে বাড়ি ফিরি তারপর রাত ৩টে থেকে আমার ১০৪ জ্বর। এক সপ্তাহ ধরে সেই জ্বর কমেনি। কালীবাড়িতে গিয়ে মা পুজো দেওয়ার পরও জ্বর ছিল। সেই অবস্থায় শুটিং করার জন্য কনকনে ঠাণ্ডায় গঙ্গায় ডুব দিতে হয়। অথচ তার পরের দিন থেকে আমার জ্বর সম্পূর্ণ সেরে যায়।” এই ঘটনার কোনও ব্যাখ্যা আজও খুঁজে পাননি নায়িকা। শুধু তিনি নন, তাঁর টিমের পক্ষ থেকে যাঁরা চৈতন্যলীলার শুটিং দেখেছিলেন প্রত্যেকের সাতদিন ধরে জ্বর ছিল। অথচ রুক্মিণী সেদিন গঙ্গার ঠাণ্ডা জলে ডুব দেওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সকলের জ্বর কমে যায়। একথা শুনে কুণাল (Kunal Ghosh) বলেন, এ তো অদ্ভুত কাণ্ড। নায়িকার সংযোজন শুধু এটাই নয়, এরকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে ‘বিনোদিনী একটি নটীর উপাখ্যান’ শুটিং করার সময়ে। অভিনেত্রী বলেন, তিনি যখনই তাঁর ছবিতে রামকৃষ্ণকে দেখেছেন এক অদ্ভুত শক্তি পেয়েছেন যা তাঁকে বুঝিয়েছে যে তিনি মৃত্যুর মুখ থেকেও ফিরে আসতে পারেন।  ২০১৯ সালে যখন এই ছবির লুক সেট হয় তখন সবার আগে চৈতন্য মহাপ্রভুকেই বেছে নিয়েছিলেন রুক্মিণী। এই সময়ে বারবার শৈশবের গুরুকুলের কথাও স্মৃতিচারণায় এনেছেন পর্দার বিনোদিনী। কুণাল জানতে চান, এই ছবি বিনোদিনীর সমকালের প্রেক্ষাপটে তৈরি কিনা? ‘ককপিট’ অভিনেত্রী বলেন, বিনোদিনীর লড়াইকে এই প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার সব প্রয়োজনীয় ট্রিটমেন্ট রয়েছে এই ছবিতে। আজ থেকে প্রায় ১৪০ বছর আগে নারীর সাহস, স্পর্ধার এই যাত্রাকে বড়পর্দায় তুলে ধরেছেন রামকমল – রুক্মিণী। ২৩ জানুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে ছবি। কুণাল (Kunal Ghosh) বলেন, রাজনীতির আলোচনার বাইরে গিয়ে এই সিনেমা নিয়ে কথা বলার নেপথ্যে তাঁর নিজস্ব এক ভালো লাগা রয়েছে। যেভাবে দেব (dev), রুক্মিণী, রামকমল-সহ গোটা টিম বিনোদিনীকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে তাতে আমাদের সকলের কর্তব্য এই ছবি হলে গিয়ে দেখা। বিনোদিনী- রামকৃষ্ণ প্রথম সাক্ষাৎপর্ব বা চৈতন্যলীলা, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সবটাই বড়পর্দায় দেখার সুযোগ। সকলকে সেই অনুরোধই করেন অভিনেত্রী।