‘বিরলতম অপরাধ’ দাবি সিবিআই-এর: সাজা ঘোষণা ২.৪৫ মিনিটে

0
3

সাজা ঘোষণার কয়েক মুহূর্ত আগে পর্যন্ত নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা অপরাধী সঞ্জয় রাইয়ের (Sanjay Rai)। যাবতীয় তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে শনিবারে সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক অনির্বাণ দাস। সোমবার সাজা ঘোষণার আগেও সঞ্জয়ের দাবির জবাবে তিনি একই তথ্য তুলে ধরেন। এমনকি সোমবার আদালতে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI) দাবি করে এই ঘটনা ‘বিরলতম’ (rarest)। কোনভাবেই সঞ্জয়ের শাস্তি খর্ব হচ্ছে না দেখে সঞ্জয়ের আইনজীবী ফাঁসির সাজা কিভাবে কম করা যায় তার জন্য আবেদন জানান।

সোমবার সকাল ১০.২০ প্রেসিডেন্সি জেল (Presidency jail) থেকে বের করে ১০:৪০ মিনিটে শিয়ালদহ আদালতে (Sealdah Court) নিয়ে আসা হয় সঞ্জয় রাইকে। বেলা ১২:৩৮ মিনিটে সঞ্জয়কে এজসালে হাজির করানোর নির্দেশ দেন বিচারক অনির্বাণ দাস। ১২.৪১ মিনিটে ২১০ নম্বর ঘরে আনা হয় সঞ্জয়কে। এরপরই শুরু হয় সওয়াল-জবাব যেখানে প্রথমেই শোনা হয় সঞ্জয় রাইয়ের কথা।

নিজের দোষ ঢাকতে সোমবারেও সঞ্জয় দাবি করে, সে শুনেছে অনেক প্রমাণ নষ্ট হয়েছে। সে নির্দোষ এবং তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে ফের একবার বিচারককে (Judge) জানায় সে। মেডিকেল করানোর সময় পুলিশি তৎপরতা নিয়ে অভিযোগ করে সঞ্জয়। এই উত্তরে কড়া প্রতিক্রিয়া বিচারকের। তিনি জানান, আমি ৩ ঘন্টা সময় দিয়েছি। শোনার জন্য। যা যা প্রমাণ (evidence) এসেছে, আপনার চেয়ে ভাল কেউ জানে না কী হয়েছে। আমার কাছে যা যা প্রমাণ (evidence) এসেছে তার উপরে আমি বিচার করতে পারি। আপনি যা বলেছেন, সব রেকর্ডে। আমার সব দেখে মনে হয়েছে সব সঠিক।

তবে সঞ্জয়ের প্রতি তার পরিবারের সমবেদনা না থাকার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে এদিন সওয়াল জবাবে। বিচারক প্রশ্ন করেন, তার বাড়ি থেকে কেউ যোগাযোগ করেছেন কিনা। উত্তরে সঞ্জয় জানায় কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে আসেনি। এই প্রসঙ্গেই সিবিআইয়ের (CBI) আইনজীবী দাবি করেন, যে অপরাধ সঞ্জয় করেছে তা ‘বিরলতম’। একজন চিকিৎসক যিনি মানুষের সেবা করতে এসেছিলেন তাকে ধর্ষণ করে খুনের মত নৃশংস অপরাধ সে করেছে। তাকে ফাঁসির শাস্তি (capital punishment) দেওয়া উচিত সাওয়াল সিবিআই-এর আইনজীবীর।

যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ এবং সাক্ষ্যদের বয়ানে সেই রাতে ঘটনাস্থলে সঞ্জয়ের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়। শেষ পর্যন্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের আর কোন পথ না পেয়ে সঞ্জয় রাইয়ের আইনজীবী ফাঁসির সাজা কম করার আবেদন জানান। তিনি জানান, সমাজ থেকে কাউকে বাদ দিয়ে দেওয়াটা সমাধান নয়। তীব্র বিরোধিতা করছি মৃত্যুদণ্ডের (capital punishment)। মামলার এখনও তদন্ত বাকি আছে। মৃত্যুদণ্ড ছাড়া যে শাস্তি আছে সেই শাস্তি দেওয়া হোক।

সর্বশেষে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী দাবি করেন সঞ্জয় সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হোক। ১.১০ মিনিটে শেষ হয় সওয়াল জবাব। বিচারক অনির্বাণ দাস জানান রায় (verdict) শোনাতে তাঁর কিছুটা সময় লাগবে। অপেক্ষা দুপুর ২:৪৫ মিনিটের, যখন তিনি সাজা ঘোষণা করবেন।