মাটি পরীক্ষা ছাড়াই হাইড্রোলিক জ্যাকের কাজ, বাঘাযতীনের দুর্ঘটনায় দায়ী প্রোমোটার: ফিরহাদ

0
2

গাড়ি লিফট করার যন্ত্র নিয়ে বাড়ি লিফটিং, মাটির পরীক্ষা না করেই হাইড্রোলিক জ্যাকের ব্যবহার- বাঘাযতীনের বিল্ডিং বিপর্যয়ে প্রোমোটারের গাফিলতিকে নিশানা করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে বহুতল ভাঙার কাজ পরিদর্শনে যান তিনি। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, অভিযুক্তরা প্রশাসনকে না জানিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছিল। এমনকী মাটির পরীক্ষা না করেই হাইড্রোলিক জ্যাকের কাজ করা হচ্ছিল। প্রোমোটারের গাফিলতির কারণেই এই বিল্ডিং বিপর্যয়। কলকাতা পুরসভার (KMC)অনুমতি ছাড়া এই বিল্ডিংয়ের কাজ করা হয়েছে। গাড়ি লিফট করার যন্ত্র নিয়ে বাড়ি লিফটিং করার হচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেন মেয়র।

এদিন হরিয়ানার যে সংস্থা বাড়িতে কাজ করছিল তাদের নিশানা করে ফিরহাদ বলেন, ”মাথামোটার মতো কাজ হয়েছে। যে সংস্থা বাড়ি লিফটিংয়ের কাজ করছিল তাঁরা ভেবেছিল হরিয়ানার মতো বাংলার মাটিও শক্ত হবে। কিন্তু এখানকার মাটি পাথুরে নয়, অনেকটাই নরম। তাই অনেক রাস্তা একটু জল জমলেই নীচু হয়ে যায়। যেকোনও গর্তে তাড়াতাড়ি জল জমে যায়। প্রোমোটার এবং ওই সংস্থার কর্মীদের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় অভ্যন্তরীণ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। নেতাজি নগর থানায় যে ৭টি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে, তার মধ্যে ৪টি কেএমসি অ্যাক্ট এবং তিনটি মামলা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী করা হয়েছে। মেয়র ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে জানান, ‘এই ফ্ল্যাটটি ২০০৯ সালে হয়েছে। সেই সময় কলোনি এলাকায় কলোনি কমিটি তৈরি করে ফ্ল্যাট হত। পরবর্তীকালে প্রোমোটার কালচার এল। শুধু এখানে নয়, গার্ডেনরিচেও হয়েছে। বিএলআরও কলকাতা পুরসভার অধীনে আনা হয়েছে। মানুষ তখন পুরসভায় যেতে পারতেন না। এখন পান। আসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাড়ির বাসিন্দারা। আর কেউই নয়। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাড়ি ভাঙার পর বাসিন্দাদের যেন কোন অসুবিধায় পড়তে না হয় সেই দিকে নজর দেওয়া হবে।’ মন্ত্রী জানান, বামফ্রন্ট আমলে অ্যাডেড এলাকায় জলাভূমি বুজিয়ে বাড়ি করার কালচার তৈরি হয়। তখন রামসে রিপোর্ট ছিল না। পরিবেশ আদালত ছিল না। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। বিল্ডিং ইন্সপেক্টরদের জন্য ১৫ দিনের রোস্টার হচ্ছে। এনারা প্রতিটি এলাকায় পাড়ায় পাড়ায় রোটেশনে ঘুরে এই ধরনের বাড়ি চিহ্নিত করবেন। এরপর ছবি তুলে রিপোর্ট অনলাইনে সাবমিট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে পুর ইঞ্জিনিয়ারের সার্টিফিকেট ছাড়া কোনও বাড়ি লিফটিং করা যাবে না। ইঞ্জিনিয়ার নিজে পরীক্ষা করে দেখবেন এই পদ্ধতি আদৌ করা সম্ভব কীনা। কেএমসির নিয়ম না মানার পুরনো অভ্যাসগুলো এবার ছাড়তে হবে বলেও এদিন কড়া বার্তা দেন মেয়র।