‘বিজেপিকে রুখতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দরকার। শরদ পাওয়ার থেকে লালুপ্রসাদ যাদবরা পর্যন্ত ইন্ডিয়া জোটের নেতারা একবাক্যে সেকথা বলছেন। তাই বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশের প্রধান মুখ করে গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’ বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা ও রেল হকারদের ওপর আরপিএফের অত্যাচারের প্রতিবাদে এবং শ্রমকোড বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে হাওড়া সদর আইএনটিটিইউসির উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় একথা বলেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
হাওড়া স্টেশন চত্বরে আয়োজিত ভিড়ে ঠাসা ওই জনসভায় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাওড়া সদর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ও বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ, সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক নন্দিতা চৌধুরি, হাওড়া সদর আইএনটিটিইউসির সভাপতি অরবিন্দ দাস সহ দলের আরও অনেকে। এদিনের জনসভায় বার্জার পেণ্টস ও ব্রিজ অ্যান্ড রুফ কারখানার প্রায় ১০০ জন শ্রমিক সিটু থেকে আইএনটিটিইউসিতে যোগ দেন। তাঁদের হাতে সংগঠনের পতাকা তুলে দেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কেন্দ্রের অধিনস্থ সংস্থা ব্রিজ অ্যান্ড রুফে বিলগ্নীকরণ করতে কেন্দ্রীয় সরকার উঠে পড়ে লেগেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তুলছি। বিষয়টি সংসদেও তুলব। লাভজনক কেন্দ্রীয় সংস্থাও বিক্রি করে দিতে চাইছে কেন্দ্র। ব্রিজ অ্যান্ড রুফে বিলগ্নীকরণের বিরুদ্ধে আমরা আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াই চালাব। এদিন ব্রিজ অ্যান্ড রুফের যে ৮০ জন শ্রমিক আমাদের সংগঠনে যোগ দিলেন তাঁরা বুঝেছেন সিটুতে থেকে এই লড়াই করা সম্ভব নয়। বিলগ্নীকরণের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে সামিল হতেই ওঁরা এদিন আইএনটিটিইউসিতে যোগ দিলেন।
এদিন ঋতব্রত আরও বলেন, বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এসে আটকে গিয়েছিল। সারা দেশে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ করে আন্দোলন সংগঠিত করতে হবে। ২০২১ সালে বিজেপি এই রাজ্যে পরাজিত হয়ে গায়ের জ্বালা মেটাতে বাংলার মানুষের ন্যায্য পাওনা টাকা আটকে রেখেছে। কিন্তু তবুও বাংলার উন্নয়নকে স্তব্ধ করতে পারেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে রাজ্যের ১২ লক্ষ মানুষকে টাকা দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে আরও ১৬ লাখ মানুষ টাকা পাবেন। এই জন্য রাজ্য সরকার ১৪ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা প্রকল্পে রাজ্যের অসংগঠিত ক্ষেত্রের ১ কোটি ৭৩ লক্ষ মানুষের নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪১ লক্ষ মানুষ এই প্রকল্পে টাকা পেয়েছেন। এখনও অসংগঠিত ক্ষেত্রে প্রায় ২৭ লাখ শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত হতে বাকি আছে। বিভিন্ন জায়গায় শিবির করে তাঁদের নাম দ্রুত এই প্রকল্পে নথিভুক্ত করা হবে। এই কাজে হাওড়া সদরে আশাতীত সাড়া পাওয়া গেছে বলে ঋতব্রত জানান। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ‘শ্রম-কোড’ চালু করতে চেয়ে শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে ধিতে চাইছে। এটি চালু হলে শ্রমিকরা ক্রীতদাসে পরিণত হবু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বাংলায় এই শ্রম-কোড চালু হবে না। আমরা কোনওভাবেই এই শ্রমকোড চালু হতে দেব না। রেল হকারদের ওপর আরপিএফের অত্যাচার ও জুলুমবাজির বিরুদ্ধে আরও জোরদার আন্দোলন চলবে জানিয়ে ঋতব্রত বলেন, আরপিএফের অত্যাচারের প্রতিবাদে আগামী ২৪ জানুয়ারি শিয়ালদহ ডিআরএম অফিসের সামনে ২০ হাজার শ্রমিকের বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। বাংলার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের চক্রান্তের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়ে ঋতব্রত বলেন, ২০২৬ এর বিধানসভা ভোটে ২৫০র বেশি আসন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ফের ক্ষমতায় আসবে। এখন থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু করারও এদিন ডাক দেন ঋতব্রত।
আরও পড়ুন- জল্পনার অবসান, বিরাট-রোহিতদের নতুন ব্যাটিং কোচ হলেন এই প্রাক্তন ক্রিকেটার
_
_
_
_
_
_
_
_