একজন কোম্পানি চেয়ারম্যান যিনি নিজের কর্মীদের থেকে ৫০০ গুণ বেশি বেতন পান, তিনিই কর্মীদের সপ্তাহের ৯০ ঘন্টা কাজের ফরমায়েশ করছেন। এলঅ্যান্ডটি-র (L&T) চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মানিয়নের নিদানে শিল্পপতি মহলে বিতর্ক চরমে। দেশের আরেক শ্রেণীর শিল্পপতিদের দাবি কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য (work life balance) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন কর্মীর জন্য।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এস এন সুব্রহ্মানিয়নের (S N Subrahmanian) একটি ভিডিও যেখানে তিনি সপ্তাহের রবিবারও কাজ করার পক্ষে সওয়াল করছেন। এমনকি পরিবারের মুখের দিকে কতক্ষণ তাকিয়ে থাকবেন, এমন প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবি ভালো ফল পেতে ৯০ ঘন্টা (90 hours week) কাজ উপযুক্ত। এমনকি তাঁর এই দাবীকে সমর্থন জানিয়েছে তার সংস্থা এলঅ্যান্ডটি (L&T)। সংস্থার দাবি অসামান্য ফল পেতে অসামান্য পরিশ্রমও করতে হয়।
সম্প্রতি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের পরামর্শ দিয়ে বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের কর্মজীবনকে নতুন পথে চালনা করার নিদান দিয়েছিলেন ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তি (Narayan Murthy)। সেই বিতর্কে নতুন সংযোজন করলেন এস এন সুব্রহ্মনিয়ান। যদিও আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি (Gautam Adani) সমর্থন করেন না সুব্রহ্মনিয়নের বক্তব্য। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছিলেন কর্মজীবন ও সংসার জীবনের মধ্যে ভারসাম্য (work life balance) বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ভারসাম্য কীভাবে বজায় রাখবেন প্রত্যেক কর্মীর ক্ষেত্রে তা বিভিন্ন হবে। যে ব্যক্তি যে কাজ করে আনন্দ পান তাকে সেই কাজের স্বাধীনতা না দেওয়া হলে কর্মক্ষেত্রে তার থেকে সর্বোচ্চ ফল প্রত্যাশা করা সম্ভব নয়।
এলঅ্যান্ডটি-র চেয়ারম্যান সুব্রহ্মনিয়নের বক্তব্যে বিতর্কের আরো এক বড় কারণ, যে চেয়ারম্যান (chairman) ৯০ ঘন্টা কাজের নিদান দিচ্ছেন তিনি বছরে যে বেতনের প্যাকেজ পান তার বেসিক ৩.৬ কোটি। অথচ এই সংস্থারই বোর্ড মেম্বার বা উচ্চ পদে না থাকা সাধারণ কর্মীদের বাৎসরিক বেতন ৯ লক্ষ ৭৭ হাজারের কাছাকাছি। মহিলাদের ক্ষেত্রে তা ৬ লক্ষ ৭৬ হাজারের কাছাকাছি। ৫০০ গুণ বেশি বেতন যে চেয়ারম্যান (chairman) পান তার মুখে ৯০ ঘন্টা কাজের নিদান স্বাভাবিকভাবেই বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।
–
–
–
–
–
–