রাজ্যের উচ্চশিক্ষার পড়ুয়াদের সাফল্যের উদযাপনে বর্তমান বাংলার সরকারের অবদান রাজ্যের প্রাক্তনীদের মনে একটা চাপা দুঃখ এনে দেয়। সেই জন্য বুধবার স্টুডেন্টস উইকের (Students Week) সমাপ্তি অনুষ্ঠানে কৃতি পড়ুয়াদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনেকটাই আবেগপ্রবণ সাংসদ জুন মালিয়া (June Maliya) থেকে বিধায়ক সায়ন্তিকা, মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজ্যের পড়ুয়াদের সমস্যাকে আন্তরিকভাবে সমাধান করতে একের পর এক জনমুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেই পদক্ষেপে অতীতের বাম আমলে বঞ্চনা স্মরণ করে আক্ষেপ নেতা-নেত্রীদের। রাজ্য সরকার পড়ুয়াদের প্রতিটি পদক্ষেপে যেভাবে পাশে থাকে তার তথ্য তুলে ধরেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
বাম আমলের অপ্রাপ্তির সঙ্গে তুলনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তুলে ধরেন, কারিগরি শিক্ষা – টালিগঞ্জে একটা আইটিআই (ITI) ছিল। আমরা প্রায় ৫০০ আইটিআই, পলিটেকনিক করেছি। সেখানে স্টাইপেন্ড দেওয়া হয়। তাদের সঙ্গে উৎকর্ষ বাংলা (Utkarsh Bangla) রয়েছে যা পলিটেকনিক আইটিআইয়ের সঙ্গে শিল্পক্ষেত্রকে যোগ করে। যে কোনও শিল্পক্ষেত্রে লোক চাইলে উৎকর্ষ বাংলা থেকে লোক নিতে পারে। উৎকর্ষ বাংলা (Utkarsh Bangla) থেকে ৪৭ লক্ষ ট্রেনিং (training) দেওয়া হয়েছে, ১০ লক্ষ ইতিমধ্যেই চাকরি পেয়ে গিয়েছে। আরও কয়েক লক্ষ চাকরির পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে।
তবে শুধুমাত্র চাকরির পথ খুলে দেওয়া নয়, মনের মতো শিক্ষা পেতে কীভাবে রাজ্যের সরকার পাশে দাঁড়িয়েছে সেই তথ্যও তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে বাংলায় নতুন নতুন যে বিষয়গুলি পড়ার সুযোগ খুলেছে তা নিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাশন স্কুল করা হয়েছে – আহরণ কলেজ, দুর্গাপুরে। হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার সুযোগ হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, যুগের পরিবর্তন এসেছে। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে নতুন বিষয় যেমন – আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI), মেশিং লার্নিং (Machine Learning), ডেটা সায়েন্স (Data Science) পড়ানো হচ্ছে। আগাম ভবিষ্যতে কাজে লাগছে ডেটা সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। পুলিশ নিজে আইন শিক্ষাকেন্দ্র করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আইন শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে।
রাজ্যের এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রাজ্যের পরিকল্পনা তুলে ধরতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নিয়ম হলো জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মাধ্যমেই কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়া যাবে। কিন্তু জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মাধ্যমে নিতে হলে বাইরের ছেলেমেয়েরা সব নিয়ে যাবে। বাংলার গরীব ছেলেমেয়েরা সুযোগ পাবে না, তারা পড়তে পারবে না। গরীব মধ্যবিত্ত ছেলেমেয়েরা যাতে পড়তে পারে, সেটাকে করে দেওয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে বাংলার পড়ুয়ারা গোটা দেশে দক্ষতায় এক নম্বর বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে ক্ষুদ্রশিল্পে এক নম্বরে থাকার পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন। আর তাঁদের যোগ্য সম্মান ও শিক্ষা দেওয়ার তথ্য পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ১১ জন এআইটিটি টপার, তিন জন ন্যাশানাল স্কিলের পদকজয়ীকে সংবর্ধনা দেওয়া হল। বর্তমানে রাজ্যে কন্যাশ্রী ৮৯ লক্ষ। খরচ হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। সবুজ সাথী ১ কোটি ২৭ লক্ষ। এমাসের শেষ থেকে স্কুলগুলি থেকে সাইকেল পাবে। ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ ৪ কোটি ১৫ লক্ষ, খরচ ৮,৯৩৬ কোটি। শিক্ষাশ্রী ১ কোটি ৩৯ লক্ষ, খরচ ১,০৬৩ কোটি টাকা। মেধাশ্রী ৬ লক্ষ ৬৮ হাজার, খরচ ৫৩ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা। স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট স্কলারশিপ ৩২ লক্ষ ৬০ হাজার। স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড ৮১ হাজারের বেশি পেয়ে গিয়েছে। বিনামূল্যে স্কুলের বই-পোশাক-ব্যাগ-জুতো ১৮ কোটি পড়ুয়া। তরুণের স্বপ্ন, ৩০ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, ১৪টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ, ৫৩টি নতুন কলেজ ও ৭ হাজারের বেশি নতুন স্কুল তৈরির তথ্যও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
–
–
–
–
–