বড়দিনের আবহে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে তিনি জানান, আলিপুর মিউজিয়ামের উল্টোদিকে একটা সরকারি বিগবাজার হবে। পাশাপাশি, রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলা শহরে তৈরি করা হবে শপিংমল।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আলিপুর মিউজিয়ামের উল্টোদিকে একটা বড় জায়গা আছে। ওখানে বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে। অর্ধেকটা দেওয়া হবে লেদার হাবের জন্য আর বাকিটা দেওয়া হবে বাংলার শাড়ি বিপননের জন্য। এটি রূপায়নের কাজ করবে হিডকো। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওই শপিংমলের (Shopping Mall) ৫০ শতাংশ জায়গাতেই থাকবে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সের উৎপাদকদের তৈরি বিভিন্ন চর্মজাত পণ্য। আর বাকি ৫০ শতাংশ জায়গায় থাকবে বাংলার শাড়ি-সহ হস্তশিল্পের সম্ভার।
এরসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “রাজ্যের সব বড় শহরে এক একর করে জমি ফ্রিতে দেওয়া হবে বিগ বাজার করার জন্য। যার দুটো ফ্লোর সেল্ফ হেল্প গ্রুপের জন্য রাখতেই হবে। বাকিটা দোকান, কমিউনিটি হল, সিনেমা হল থাকবে। এটা টেন্ডার করে দেওয়া হবে।” মুখ্যমন্ত্রী এও জানান, এজন্য সরকারকে আলাদা করে কোনও জমি নিতে হবে না। শিল্পের জন্য সরকারের নিজস্ব ল্যান্ড ব্যাঙ্ক রয়েছে। সেখান থেকেই এই বিগ বাজার তৈরির জমি দেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের বলেন, এজন্য জমি চিহ্নিত করার কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। তা মল তৈরি করতে আগ্রহী সংস্থাকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে। তবে মলের দুইটি তলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে তাদের উৎপন্ন পণ্য বিপণনের জন্য দিতে হবে। এই শর্তেই আগ্রহী সংস্থাকে দেওয়া হবে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, চর্মশিল্পে বাংলার খ্যাতি এখন বিশ্বজোড়া। এবার দেশ-বিদেশ থেকে আগত পর্যটকদের সামনে একে আরও ভালো ভাবে তুলে ধরতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মল গড়ে তোলার জন্য প্রথম পর্য়ায়ে ১০টি শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এগুলি হল উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, ইংরেজবাজার এবং দক্ষিণবঙ্গের বহরমপুর, দুর্গাপুর, আসানসোল, বর্ধমান, দিঘা, মেদিনীপুর ও চন্দননগর রাজ্যে এই মুহূর্তে গ্রামাঞ্চলে ১২ লক্ষ ৫ হাজার ৯৪৬টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। সদস্য সংখ্যা ১ কোটি ২২ লক্ষের বেশি। সবাই মহিলা। শহরাঞ্চলেও আরও কয়েক লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। এদের প্রধান সমস্যা হল বিপণন। স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরির কাজ শুরুতেই তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজার করতে সরকারি উদ্যোগে ব্র্যান্ড তৈরি করার কথা বলা হলেও বিশেষ এগোয়নি সে কাজ।এমত অবস্থায় হস্তশিল্প থেকে আচার-পাঁপড়- মোরোব্বা- স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে তৈরি হাজারও সামগ্রীর জন্য বিস্তৃত বাজার তৈরি করে দিতেই এই উদ্যোগ।
এই ১০টি শহরের প্রতিটিতে গড়ে তোলা হবে ৫ তলা শপিং মল (Shopping Mall) যার নিচের দু তলায় থাকবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি নানা পণ্য। বাকি অংশে গাড়ি পার্কিং থেকে শুরু করে ক্য়াফেটেরিয়া, সিনেমা হল সবই থাকবে। এই ভাবনাকে সামনে রেখেই কলকাতার ঢাকুরিয়ার কাছে দক্ষিণাপনের পাশে বাংলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য চালু হয়েছে নিজস্ব মল। সেই ধাঁচেই মল গড়ে তোলা হবে জেলার শহরেও।
–
–
–
–
–