সংবিধান নিয়ে লোকসভার আলোচনাপর্বে মোদির উন্নয়ন কোন জমির উপর দাঁড়িয়ে বাস্তবে, সেই পর্দা ফাঁস করলেন তৃণমূল সাংসদ। মোদি সরকারের কার্যকালেই সব থেকে বেশি অসাংবিধানিক পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে৷ সব থেকে বেশি বার সাংবিধানিক মূল্যবোধের উপরে কুঠারাঘাত করা হয়েছে৷ লোকসভায় সংবিধান (Constitution) বিষয়ক আলোচনায় অংশ নিয়ে এভাবেই সোচ্চার হয়ে মোদি সরকারের মুখোশ খুলে দিল তৃণমূল কংগ্রেস৷ এই প্রসঙ্গেই বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) দাবি, সংবিধান মেনে দেশের উন্নয়ন হয়েছে স্বাধীনতার পর থেকেই৷ বিগত দশ বছরে মোদি সরকারই একমাত্র এই উন্নয়নের কান্ডারি নন৷ এই ক্ষেত্রে পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু (Jawaharlal Nehru) থেকে শুরু করে মনমোহন সিং এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি- কৃতিত্ব দিতে হবে সবাইকেই, কোনও একজন এই কৃতিত্বের দাবি জানাতে পারেন না৷
শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সংবিধান বিষয়ক আলোচনায় প্রথমে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদি সরকারের ভূমিকাকে কাঠগড়ায় তোলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)৷ কেন্দ্রের তরফে যেভাবে বাংলাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে তার উদাহরণ তুলে ধরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, এই ভাবে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ধ্বংস করার অধিকার প্রধানমন্ত্রীকে কে দিয়েছে? আমাদের রাজ্যের বিধানসভায় মহিলাদের সুরক্ষার জন্য পাস করা অপরাজিতা বিলে (Aparajita bill for women and children) কেন সই করা হয়নি? কেন বাংলাকে তার বকেয়া টাকা দেওয়া হচ্ছে না৷ একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার মত কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দিনের পর দিন বকেয়া থাকছে বাংলার ন্যায্য টাকা৷ কেন বারবার দাবি জানানোর পরেও বকেয়া টাকা দিচ্ছে না মোদি সরকার? কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণে বাংলার মানুষের মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার খর্ব হচ্ছে৷
এখানেই না থেমে অগ্নিগর্ভ মণিপুর (Manipur) প্রসঙ্গ তুলে ধরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোপ, মণিপুরের (Manipur) ভয়াবহ হিংসার জেরে সেখানকার মানুষের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে দিনের পর দিন৷ দেড় বছরের বেশি সময় ধরে জ্বলছে মণিপুর৷ কেন সেখানে মহিলাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, তাদের নৃশংস ভাবে হত্যা করা হচ্ছে ? ভোটের আগে বাংলার সন্দেশখালিতে গিয়ে প্রধানমত্রী মোদি বলেছিলেন, সন্দেশখালির মহিলারাও আমাদের দেশের মহিলা৷ তাহলে আমার প্রশ্ন, মণিপুর কি দেশের অন্তর্গত নয় ? সেখানকার মহিলারা কি দেশের মহিলা নন ? তাহলে তাদের সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে না কেন ? কেন প্রধানমন্ত্রী মোদি একবারও মণিপুর পরিদর্শনে যাননি, কেন তিনি মণিপুর প্রসঙ্গে নীরব থেকেছেন ?
এর পরে লোকসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মোদি সরকারকে তুলোধোনা করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র৷ তাঁর অভিযোগ, সরকারি টাকা ভোটের কাজে খরচ করেছে বিজেপি৷ এর পাশাপাশি সাংবিধানিক ভিত্তিতে তৈরি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন, তথ্য কমিশন, মানবাধিকার কমিশনের মত কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলির ক্ষমতা খর্ব করে তাদের মর্যাদাহানি করেছে মোদি সরকার, অভিযোগ করেন মহুয়া মৈত্র৷ সিবিআই, ইডির মত কেন্দ্রীয় এজেন্সি গুলিকে কাজে লাগিয়ে দিনের পর দিন ধরে বিরোধী শাসিত রাজ্যের ছাত্র নেতা, সমাজকর্মী, এমনকি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আধিকারিকদেরও হেনস্তা করছে মোদি সরকার, লোকসভায় অভিযোগ করেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র৷
–
–
–
–
–
–
–