কিংবদন্তি পরিচালক তপন সিনহা (Tapan Sinha) কি তাঁর কর্মজীবনে প্রাপ্য সম্মান পেয়েছিলেন? ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (30th Kolkata International Film Festival) শেষ লগ্নে রবীন্দ্রসদন জুড়ে এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করল শতবর্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে। উপস্থিত ছিলেন পরিচালক অশোক বিশ্বনাথন, প্রাবন্ধিক শঙ্কর লাল ভট্টাচার্য, সিনে বিশ্লেষক- লেখক অমিতাভ নাগ, পরিচালক রাজা সেন, চিত্র সমালোচক শিলাদিত্য সেন। কালজয়ী পরিচালক তপন সিনহা তাঁর কর্মজীবনে সেভাবে বিজ্ঞাপিত হননি। বাঙালি কি সত্যজিৎ – ঋত্বিক- মৃণালের আলোয় কিছুটা বিস্মৃতিতে রাখতে চেয়েছে আতঙ্ক পরিচালককে? উপস্থিত বক্তারা সকলেই একমত, তৎকালীন রাজরোষ আর রাজনীতির শিকার সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা বাঙালি পরিচালক তপন সিনহা। তাই মিডিয়ায় নজর থেকেও অনেকটাই ব্রাত্য এই কিংবদন্তি।
ছায়া ও ছবিতে যে কথা বলা যায় সেটাই সিনেমা। এমন ভাবনাকে চিরকাল প্রাধান্য দিয়েছেন বাংলা সিলভার স্ক্রিনের ‘তপন’। আলাদা কোনও দর্শনের পরিপন্থী নন, দর্শন যেভাবে দর্শক আত্মস্থ করেন সেটাই তাঁর ছবির উপজীব্য। সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray)যে কলকাতা ট্রিওলজি করেন, তার সূচনা কিন্তু তপন সিনহা ‘আপনজন’ দিয়েই করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সিনেমার আর্ট বা কালচার নয়, মানুষের কঠিন- চ্যালেঞ্জিং বাস্তবকে পর্দায় তুলে ধরতে পারা এক ব্যতিক্রমী পরিচালক হিসেবে সত্যিই অনন্য তপন সিনহা। অথচ কাজের একক বৃত্তে নিজেকে গুটিয়ে রাখা এই কিংবদন্তিকে নিয়ে আর্কাইভ বা চর্চায় বরাবরই আগ্রহ কম বাঙালির। যদিও তিরিশ-তম কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যেভাবে তাঁকে নিয়ে একটি বই প্রকাশ করা হয়েছে তা যথেষ্ট প্রশংসনীয়।