বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সময় ‘দ্রোহের কার্নিভালের’ নামে মানুষের আবেগ নিয়ে ছেলেখেলা করা আর জি করের ‘প্রতিবাদী’ ডাক্তারবাবু কিঞ্জল নন্দ (Kinjal Nanda) শুক্রবারে সন্ধ্যায় হাসিমুখে হাজির হলেন ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (30th Kolkata International Film Festival)। তিনি একা নন, অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীকেও (Sudipta Chakraborty) দেখা গেল সিনে প্রাঙ্গণে। হাসিমুখেই নিজেদের ছবির জন্য অভিবাদন গ্রহণ করলেন। অভয়ার বিচার চেয়ে দুর্গোৎসবের বিরোধিতা করা দুই সেলিব্রেটির মাস ঘুরতে না ঘুরতেই সিনেমার উৎসবে অংশগ্রহণ কি দ্রোহের দ্বিচারিতা নয়? সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে এমন প্রশ্নই উসকে দিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (KIFF ) ঘিরে বিনোদনপ্রেমী মানুষের উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো। দেশীয় ছবির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ছবির সমাহারের মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ মেনে এ বছর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলা ছবিকে। শুক্রের সন্ধ্যায় রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহে সুদেষ্ণা রায় ও অভিজিৎ গুহ পরিচালিত ‘আপিস’ ছবির স্পেশাল স্ক্রিনিং অনুষ্ঠিত হয়। সেই উপলক্ষে হাজির ছিলেন দুই কলাকুশলী সুদীপ্তা চক্রবর্তী এবং ডাক্তার কিঞ্জল নন্দ। দুজনেই আবার আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম ‘প্রতিবাদী’ মুখ হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইমলাইট পেয়েছেন। যেহেতু সিনেমা নিজেদের রুজি রোজগারের পথ, তাই চলচ্চিত্রের সবথেকে বড় উৎসবে হাজির হতে বাধা নেই। অথচ দুর্গাপুজোর মতো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবকে বানচাল করার জন্য সব সীমা লংঘন করতে দেখা যায় এনাদের। এটা কি সাধারণ মানুষের আবেগ নিয়ে ছেলে খেলা করা নয়? গোটা বিষয়টিকে দ্রোহের দ্বিচারিতা আখ্যা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন কুণাল। তিনি লেখেন, ‘দুর্গোৎসব খারাপ। ফিল্মোৎসব ভালো। দ্রোহের দ্বিচারিতা। নন্দন চত্বরে, শুক্রবার। কিঞ্জল, সুদীপ্তা। কোনও ব্যক্তি আক্রমণ নয়। কৌতূহল। উৎসব? বিচার? এসব লেখার পর নিজেদের স্বার্থে চলচ্চিত্র উৎসবে যেতে সমস্যা নেই? তাহলে দুর্গোৎসবের সময় সবরকম নেতিবাচকতা ছিল কেন? ও! বাই দ্য ওয়ে, কুলতলির ধর্ষণ, খুনে ৬২ দিনের মাথায় আজ ফাঁসির শাস্তি হল। অতিনাটক করে সিবিআই ডেকে এনে আর জি করের বিচার শেষ হল না। অভয়ার আবেগ নিয়ে কিছু লোক ছেলেখেলা করে নিজেদের স্বার্থে কাজ চালাল। আজ ক্রমশ তা সামনে আসছে।’
দাবি আদায়ে অনড়, ‘দিল্লি-দূর্গে’ ঢুকতে মরিয়া কৃষকরা
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (RG Kar Medical College and Hospital) জুনিয়র ডাক্তারবাবু মেডিক্যাল প্রফেশনের পাশাপাশি লাইট- ক্যামেরা- অ্যাকশনের দুনিয়াতেও যথেষ্ট ব্যস্ত। কর্মবিরতির নামে চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন না করে, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে ব্যস্ত ছিলেন অভিনেতা-ডাক্তার। সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি বরাবরই সক্রিয় আর সেখানে একের পর এক তবে নতুন সিনেমা আর বিজ্ঞাপনের ছবি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে হঠাৎ করে ‘বিদ্রোহী’ হয়ে ওঠা কিঞ্জল নন্দ, ডাক্তার হিসেবে নিজের কাজ করুন বা না করুন, অভিনেতা হিসেবে টলিউডে কাজ চালিয়ে গেছেন। আর এই সবটাই হয়েছে নির্যাতিতার ইমোশনকে ব্যবহার করে। ডাক্তার তথা অভিনেতাকে কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, ‘কিঞ্জল, বিচার পেয়ে গেছে অভয়া? উত্তর না হলে, এখনও তোমাদের মিছিল চললে, তুমি চলচ্চিত্র উৎসবে কেন?’ আবার প্রযোজক পরিচালকদের নজর থেকে দূরে থাকা সুদীপ্তা আচমকা একটি রিয়ালিটি শো-এর অন্যতম মুখ হয়ে নতুন করে ক্যারিয়ার শুরু করেছেন। কাকতালীয় হলেও এটা মানতেই হচ্ছে, এইসব ঘটনাই ঘটেছে আরজি কর আন্দোলনের সময়ে। কোথাও গিয়ে সূক্ষ্ম একটা অংক মেলাতে শুরু করেছেন আমজনতাও।