বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যৌনকর্মীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ও পেনশন সুবিধা দিতে একটি নতুন আইন এনেছে বেলজিয়ামে। পাশাপাশি এ আইনের আওতায় যৌনকর্মীরা কর্মসংস্থান চুক্তি, স্বাস্থ্য বিমা ও অসুস্থতাজনিত ছুটি পাবেন। সোজা কথায়, আর সব চাকরির মতোই গণ্য হবে এই পেশা।বেলজিয়াম সরকারের দাবি, তাদের এই পদক্ষেপের ফলে আর পাঁচটা কর্মক্ষেত্রের মতো যৌনকর্মীরাও সামাজিক ভাবে সুরক্ষিত থাকবেন। কর্মক্ষেত্রে তারা আর বঞ্চনার শিকার হবেন না।
পাশাপাশি এই আইনের আওতায় যৌনকর্মীরা কর্মসংস্থান চুক্তি, স্বাস্থ্য বিমা ও অসুস্থতাজনিত ছুটি পাবেন।বরং বলা ভাল, আর সব চাকরির মতোই গণ্য হবে এ পেশা। ২০২২ সালে বেলজিয়ামে যৌনকর্মকে অপরাধমুক্ত করা হয়। এছাড়া জার্মানি, গ্রিস, নেদারল্যান্ডস ও তুরস্কের মতো কয়েকটি দেশেও এ পেশা বৈধ। তবে কর্মসংস্থান অধিকার ও চুক্তির অধিকার বেলজিয়ামই প্রথম দিল।
যে আইন আনা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে বঞ্চনা দূর করতে নয়া আইনে যৌনকর্মীদের দেওয়া হবে কর্মসংস্থানের শংসাপত্র। সেটা দেখিয়ে তারা স্বাস্থ্যবিমা, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং আইনি সুরক্ষা পাবেন।নতুন আইনে যৌনকর্মীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে ‘প্যানিক বাটন’-এর মতো সুবিধা আনা হচ্ছে। কোনও ‘খদ্দেরের’ ব্যবহার বা কাজে অস্বস্তি বোধ করলে নির্দিষ্ট বোতামে চাপ দিয়ে সাহায্য চাইতে পারেন সংশ্লিষ্ট যৌনকর্মী। চাইলে কোনও ‘খদ্দের’কে ‘না’ বলার অধিকার রয়েছে তাঁদের।
বিশ্বের আদিমতম জীবিকা হল দেহব্যবসা।ইতিহাসে কোনও নির্দিষ্ট সময়ে সমাজের প্রতিফলন কিন্তু এই যৌনকর্মীদের সামাজিক অবস্থানের মধ্যে দিয়েই ফুটে ওঠে। বেলজিয়ামে এই আইনও এক দিনে আসেনি। অতিমারি করোনার সময়ে রুজিরুটি নিয়ে সংশয়ের মধ্যে পড়েছিলেন যৌনকর্মীরা। ওই সময়ে আন্দোলনও হয়।এই আইন তৈরির আগে বিস্তর বিরোধিতাও ছিল।
একাংশের যুক্তি ছিল, আইন এনে যৌনকর্মীদের সুরক্ষা দেওয়ার অর্থই হল দেহব্যবসা এবং মহিলা পাচারের মতো সমস্যাগুলিকেও আইনি বৈধতা দেওয়া। প্রচুর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সরব হয়। তাদের দাবি, শ্রমের অধিকারের চেয়েও প্রচুর যৌনকর্মী চান এই পেশা থেকে মুক্তি।পাল্টা যুক্তি ছিল, যৌনকর্মীদের জন্য এই আইন আনলে এই পেশায় যাঁরা ‘নিয়োগকর্তা’, তাঁদের জুলুম বন্ধ করা যাবে। কর্মীদের মর্যাদা বৃদ্ধি হবে। তাঁদের শ্রমের প্রতি সম্মান জানানো হবে।