বিশ্বের বৃহত্তম গুহায় উড়তে পারে বিমান! রয়েছে নিজস্ব আকাশ, চমকে দেবে সেই আবিষ্কার

0
1

আশ্চর্য প্রকৃতি! পৃথিবীর বৃহত্তম গুহায় চলে বিমান। এই গুহায় রয়েছে নিজস্ব আকাশ, সেই আকাশে ভেসে চলে মেঘ। দুর্গম গুহায় রয়েছে পরতে পরতে চমক।

হাং সং ডুং বা সং ডুং গুহা। ওই নামের অর্থ পাহাড়ের গুহা বা পাহাড়ি নদী গুহা। ভিয়েতনাম-লাওস সীমান্তে অবস্থিত। গুহার প্রবেশ দ্বার ভিয়েতনামের কোয়াং বিন প্রদেশে হোং হা কে বাং জাতীয় উদ্যানে।

এই চুনা পাথরের গুহাটির বয়স প্রায় ২০ থেকে ৫০ লক্ষ বছর। আবিষ্কার হয়েছিল ১৯৯১ সালে। জানেন কী করে আবিষ্কার হয়? সেও এক গল্প। স্থানীয় এক কৃষক প্রথম লক্ষ্য করেন গুহাটি। হো হান মামে ওই কৃষক দুষ্প্রাপ্য ভেষজের খোঁজে জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরছিলেন। তখনই আচমকা শুরু হয় বৃষ্টি। আশ্রয়ের খোঁজে অন্য হয়ে ঘুরতে ঘুরতেই আশ্চর্যজনকভাবে দেখা পান গুহার। সেখানেই আশ্রয় নেন। সেই সময় শুনতে পান তীব্র বেগে নদী বয়ে যাওয়ার শব্দ। আশ্চর্য হয়ে যান তিনি। গুহার ভিতরে কোথা থেকে এল নদী! উৎসুক হয়ে এগিয়ে যান। তারপর দেখেন এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। অন্তহীন গুহা। উপরে ভাসছে মেঘ। দুর্গম পথ দেখে আর বেশি এগোননি। ফিরে আসেন ওই কৃষক। কিন্তু গভীর বন থেকে বেরিয়ে দ্বিতীয়বার আর তিনি হদিস পাননি গুহার।
তারপর কেটে যায় ১৮ বছর। এবার এক শিকারি ওই গুহার সন্ধান পান। তিনি কিন্তু গুহার ঠিকানা ভুলে যাননি। তাঁর দ্বারাই বিশ্বের সামনে আসে ওই অনন্য গুহার অস্তিত্ব। সন্ধানে নেমে জানা যায় এটিই বিশ্বের বৃহত্তম গুহা।

এর আগে মালয়েশিয়ার ডিয়ার কেভ ছিল শিরোপার অধিকারী। নয়া এই আবিষ্কারে ডিয়ার কেভকে সরিয়ে বৃহত্তম গুহার শিরোপা পায় সং ডং। ব্রিটিশ কেভ রিসার্চের অভিযাত্রীরা ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই গুহায় অভিযান চালান। এর মধ্যে রয়েছে বিশাল চুনা পাথরের প্রাচীর। ওই প্রাচীরের নাম দেওয়া হয় গ্রেট ওয়াল অফ ভিয়েতনাম। গুহাটি প্রায় ৬৬০ ফুট উঁচু। চওড়ায় ৪৯০ ফুট। ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ গুহাটির ছাদে দুটি বিশাল সিঙ্কহোল বা গহ্বর আছে। সেখান দিয়ে সূর্যালোক প্রবেশ করে। ফলে উদ্ভিদের বংশবিস্তারও হয় গুহার মধ্যে।
২০১৯ সালে জানা যায় ওই গুহাটি আরও একটি গুহার সঙ্গে সংযুক্ত। এই গুহায় থাকা সর্বোচ্চ চুনাপাথরের স্তম্ভের উচ্চতা ২৬২ ফুট। গুহায় বাধা বলতে শুধু ওই স্তম্ভটিই। তা না হলে বিমানও উড়ে যেতে পারত এই গুহা দিয়ে। ৪০ তলা উঁচু গগনচুম্বী অট্টালিকাও এখানে অবহেলায় আশ্রয় নিতে পারে। গুহার মধ্যে রয়েছে নিজস্ব আবহাওয়া চক্র। গুহার আকাশে তৈরি হয় মেঘ। ২০১৩ সাল থেকে শুরু হয় পর্যটন। তবে প্রতিবছর সীমিত সংখ্যক পর্যটক অনুমতি পান গুহায় পা রাখার। টানা দুদিন গভীর অরণ্যের মধ্যে ট্রেক করে তবেই পৌঁছনো যায় গুহামুখে।

আরও পড়ুন- বৈঠক ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে শিণ্ডে! ‘ঘোষণা’র চমক শিবসেনার