আশা জাগিয়েও মহারাষ্ট্র বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ কংগ্রেস-উদ্ধব-শারদের মহাবিকাশ অঘাড়ি (MVA) জোট। এমনকি বিজেপির নেতৃত্বে মহাযুতী জোটের ধারেকাছেও আসতে পারলেন না তাঁরা। বিজেপি একাই এত আসনে জয় লাভ করে যা এমভিএ জোটের থেকে বেশি। কার্যত দেখা গেল এমভিএ জোটের সব প্রতিশ্রুতিকে প্রত্যাখ্যান করল মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) মানুষ। নির্বাচনের আগে থেকে শিণ্ডে সরকারের নেওয়া লড়কি বহিন (Ladki Bahin) যোজনাতেই আস্থা রাখল আরব সাগরের পাড়ের রাজ্য।
মহারাষ্ট্র নির্বাচনে ২৫ বছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে ২০২৪ নির্বাচনে। ২০১৯ সালে যেখানে ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছিল, সেখানে এবারে ভোট পড়েছে ৬৫.১ শতাংশ। ভোটদানের হার বাড়ায় অনেকখানি ভূমিকা রয়েছে মহিলা ভোটের। অর্থাৎ স্পষ্ট হয়েছে শিণ্ডে (Eknath Shinde) সরকারের ‘লড়কি বহিন’ (Ladki Bahin) যোজনায় আস্থা রেখেছেন মহারাষ্ট্রের মানুষও। যদিও ভোট প্রচারে কংগ্রেস মহিলাদের জন্য আনা যোজনায় টাকার অঙ্ক বাড়ানোর কথা বললেও তাতে আস্থা রাখতে পারেনি কংগ্রেস। যে প্রকল্প বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নকল করে তৈরি করা হয়েছিল, তা-ই অনেকখানি নির্ণায়ক ভূমিকা নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ (NDA) জোটের জয়ে।
তবে বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি মহারাষ্ট্রে বেশ খানিকটা কাজ করেছে বলে অনুমান রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। মারাঠা ভোট যখন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট নিজেদের পক্ষে করেছে, তখন বিজেপি অনগ্রসর শ্রেণির (OBC) ভোটকে বিভাজনের রাজনীতি দিয়ে নিজেদের পক্ষ করার পথে হেঁটেছে। আর এই ভোটব্যাঙ্ক বিজেপি-জোটের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।
যদিও বাংলাকে অনুকরণ করে মহিলাদের প্রকল্প নিয়ে জেতার পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মডেলকে অস্বীকার করা বিজেপিকে এক হাত নিয়েছে তৃণমূল। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মডেলটিই এখন অন্য রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। যেটা নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) করতে গিয়েছিলেন বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও – ওটাতে মানুষের উপকার নেই। মেয়েটির কাছে তো টাকা পৌঁছাচ্ছে না। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী মায়েরা, বোনেরা, ঘরের মেয়েটি পাচ্ছে। বিজেপির সে সব বালাই ছিল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মডেল এখন দেখছে জরুরি মডেল, মানুষ সেটাই পছন্দ করছেন। প্রথমে যারা একে কটাক্ষ করেছিল, এখন তাঁদেরই এটা নকল করতে হচ্ছে।”