আদিবাসী জনজাতির সংঘর্ষ আবার ধ্বংসাত্মক চেহারা নিয়েছে মনিপুরে (Manipur)। মেইতি জনজাতির ছয় সদস্যের নৃশংস খুনের পরে ইম্ফল (Imphal) জুড়ে আন্দোলনে মেইতিরা। সেই সঙ্গে পাহাড়ি এলাকাতেও কেন্দ্রীয় বাহিনী ও কুকি জনজাতির সঙ্গে জারি রয়েছে সংঘর্ষ। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ফের অশান্তি ছড়ায় জিরিবামে। তবে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তহীনতাকে দায়ী করে জিরিবামের (Jiribam) বিজেপি কর্মীরা দল ছাড়লেন। পরিস্থিতি সামলাতে রবিবারের পরে ফের সোমবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। মনিপুরকে শান্ত করতে আরও ৫ হাজার বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের।
মেইতি (Meitei) জনজাতির একই পরিবারের ছয় সদস্যের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের পরে রবিবার থেকে আগুন জ্বলা শুরু হয় ইম্ফলে। সেই সঙ্গে জিরিবামেও মেইতিরা কুকি (Kuki) জনজাতির উপর হামলা চালাতে শুরু করে। ইম্ফলের মতো জিরিবামেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কুকি জনজাতির দাবি তাদের এক যুবককে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় খুন করে ফেলে রেখে যায় মেইতিরা। এরপর রবিবার রাত থেকে অশান্তি বাড়ে জিরিবামে। দুই জনজাতির সংঘর্ষ থামাতে গুলি চালায় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর যৌথ বাহিনী (CRPF)। সেই গুলিতে এক যুবক নিহত ও এক যুবকের আহত হওয়ার দাবি করেছে জনজাতির সদস্যরা।
এরপরই জিরিবাম এলাকায় বিজেপির অন্দরে বিক্ষোভ শুরু হয়। তড়িঘড়ি এনডিএ-র সদস্য বিধায়কদের বৈঠকে ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং (N Biren Singh)। রবিবারই এনডিএ (NDA) জোট থেকে বেরিয়ে এসে সরকারের উপর সমর্থন তুলে নেয় কনরাড সাংমার এনপিপি (NPP)। অন্যদিকে বিজেপির জিরিবাম জেলার জেলা সভাপতি সহ সব সদস্যও সোমবার ইস্তফা দেয় দল থেকে। জিরিবামের (Jiribam) অসহায় অবস্থার জন্য বিজেপিকে দায়ী করে তাঁরা ইস্তফা দেন।
তবে দিল্লিতে বসেই মনিপুরকে নিয়ন্ত্রণ করার যে পন্থা বিজেপি শাসিত কেন্দ্রের সরকার নিয়েছে তা জারি রয়েছে সোমবারও। সিআরপিএফ, গোয়েন্দা দফতর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উত্তর-পূর্ব বিশেষজ্ঞ শীর্ষ নেতারা অমিত শাহের (Amit SHah) ভবনে বৈঠকে বসেন। রবিবারই মনিপুরে যান সিআরপিএফের ডিজি। রবিবার শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে সিদ্ধান্ত হয় জিরিবামের তিন হিংসার তদন্ত করবে এনআইএ (NIA)। মেইতি জনজাতির হাতে শিক্ষিকার নৃশংস খুন, বোরোকেবরায় ১০ কুকি যুবকের মৃত্যু ও মেইতি পরিবারের ছয় মহিলা ও শিশুর খুনের তদন্তে এখন এনআইএ। সেই সঙ্গে সোমবারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পরিস্থিতি সামলাতে মনিপুর যাবে সিএপিএফের (CAPF) ৫০ কোম্পানি বাহিনী। যার ফলে মনিপুরে আরও ৫ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়বে।