মণিপুর (Manipur) জ্বলছে। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) বিদেশ ভ্রমণ করছে। দেশের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি উপেক্ষা করে তিনি নাইজেরিয়ার সর্বোচ্চ সম্মান গ্রহণ করছেন। দীর্ঘদিন ধরে একটি রাজ্যে হিংসার (Violence) ঘটনা ঘটে চলেছে, আর দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বিকার। তিনি একটি বারের জন্যও সেই রাজ্য পরিদর্শনে যাননি। কোনও ব্যবস্থা নেননি. হিংসা দমনের। মহিলারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, প্রাণ চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। তবুও ভ্রুক্ষেপহীন তিনি।
শুধু কি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah-ও এই সমস্যা সমাধানের জন্য কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি আজও। জনরোষে মন্ত্রী-বিধায়ক থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনও আক্রান্ত। মাঝে কিছুদিন আপাত শান্ত থাকার পর ৬ জন আন্দোলনকারীর অপহরণ ও খুনের ঘটনায় আগুন জ্বলতে শুরু করে। দ্রুত বিচার চেয়ে আছড়ে পড়ে জনরোষ। কিন্তু বিজেপিশাসিত মণিপুরের অপদার্থ প্রশাসন সেই আন্দোলন দমন করতে পারেননি, পারেননি সুবিচার দিতেও। তাতেই ক্ষিপ্ত মণিপুরবাসী।
ইম্ফল উপত্যকার মেইতি এবং পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের জনজাতি কুকিদের মধ্যে জাতিগত বিরোধের কারণে গত বছরের মে থেকে মণিপুর উত্তপ্ত। দুই শতাধিক মানুষের প্রাণ চলে গিয়েছে। অগ্নিসংযোগের জেরে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী একাধিকবার মণিপুরে গিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আসার অনুরোধও জানিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আসেননি মণিপুরে। সংসদে কোনও বিবৃতিও দেননি। তা নিয়ে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে সংসদ। এবার ফের একবার রাহুল গান্ধী আবেদন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ ভ্রমণ ছেড়ে এবার একটু মণিপুরের দিকে দেখুন। দেখুন, মণিপুরে কী ঘটছে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রচারে ব্যস্ত নির্বাচনের জন্য, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিদেশ ভ্রমণে আর আমাদের একটি রাজ্য জ্বলছে। মণিপুরের পরিস্থিতি কীভাবে স্বাভাবিক হবে, তার কোনও চিন্তা নেই! এই ঘটনা প্রতিটি ভারতীয়র জন্য বেদনাদায়ক। রাহুল গান্ধী দেশের আসল সমস্যা নিয়ে আওয়াজ তুলেছেন।
বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের অভিযোগ, মোদি সরকারের দুর্বল নীতির কারণে মণিপুর অশান্ত হয়ে উঠছে। হিংসা দমনের কোনও চেষ্টাই নেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের। উত্তরোত্তর বাড়ছে অশান্তি। ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের শোচনীয় পরিস্থিতি। রাজ্যে বিজেপির সরকারের সঙ্কটও দিন দিন বাড়ছে। যতই সংখ্যা থাকুক হাতে, আর নিরাপদ নয় সরকার। এই সরকারের কোনও দায় নেই মণিপুরের শাসন ক্ষমতায় থাকার। উল্লেখ্য, ৬০ আসনের বিধানসভায় বিজেপি একাই ৩২টি আসনে জিতে ক্ষমতায় এসেছে। তাদের সমর্থন জানিয়েছিলেন এনপিপি থেকে শুরু করে কেপিএ ও নির্দল বিধায়করা। কিন্তু একে একে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। কংগ্রেসও ইস্তফার হুমকি দিয়েছে বিধানসভা থেকে।
আরও পড়ুন- মোদি-রাজ্যে তিন ঘণ্টা ‘নীল-ডাউনে’ মৃত্যু ডাক্তারি পড়ুয়ার, নীরব কেন রাতদখলের কাণ্ডারিরা