মুথ থুবড়ে পড়ল বিজেপির (BJP) মিশন। সদস্যতা অভিযানে মতুয়াগড়ে (Matua) ৩ লক্ষের টার্গেট দেওয়া হয়েছিল বঙ্গ বিজেপিকে. তার ধারেকাছে পৌঁছনো তো দূর-অস্ত, ১০ শতাংশও পূরণ করতে পারলেন না মতুয়াগড়ের তথাকথিত সঙ্ঘাধিপতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া টার্গেটের সঙ্গে বাস্তবের ফারাক রয়ে গেল আসমান-জমিনের।
বিজেপি সম্প্রতি দেশজুড়ে নতুন সদস্যতা অভিযানে নেমেছে। সেই অভিযানে বঙ্গ বিজেপিকে টার্গেট দেওয়া হয়েছিল ১ কোটি। কিন্তু ১৫ লক্ষের বেশি সদস্য সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছে তারা। তার মধ্যে মতুয়াগড়ে ৩ লক্ষ টার্গেট দেওয়া হয়েছিল। বিজেপি মাত্র ২৫ হাজার সদস্য সংগ্রহ করতে পেরেছে। এই পরিসংখ্যানই স্পষ্ট করে দিয়েছে বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে মতুয়ামহল। বিজেপির এই সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলার কথা ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত। সেই জায়গায় বিজেপির অভ্যন্তরীণ পরিসংখ্যান বলছে, ১০ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ২৫ হাজার সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। রবিবারই মেয়াদ ফুরোচ্ছে, এই সংখ্যা তাই লক্ষ্যমাত্রার ১০ শতাংশ পূরণ করতে পারবে কি না, ধন্দে বিজেপি।
২০১৯-এর নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির যেটুকু বাড়বৃদ্ধি হয়েছিল, তার বেশিরভাগটাই মতুয়াগড় ঠাকুরনগরের সৌজন্যে। ২০২১ ও ২০২৪-এর ভোটেও কিঞ্চিৎ হলেও সেই অগ্রগমন ধরে রাখতে পেরেছিল বিজেপি। কিন্তু সেই সমর্থন যে তারা হারাতে চলেছে, তা বিজেপির সদস্যতা অভিযানে ফের একবার সামনে এসেছে। এখান থেকে জিতে মন্ত্রী হয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। তারপরও কেন এমন করুণ অবস্থা বিজেপির? তবে কি বিজেপির প্রতিশ্রুতির ফানুস ফুটো হয়ে গিয়েছে। নাগরিকত্বের ‘টোপ’আর গিলছেন না মতুয়ারা!
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, মানুষকে বারবার প্রতারিত হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার মতুয়াগড়ে। তারপর বিজেপির আদি ও নব্য গোষ্ঠীর লাগামহীন কোন্দল তো লেগেই রয়েছে। সাংসদ তথা মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বিধায়ক তথা জেলা নেতৃত্বের একটি বড় অংশের বিরোধ লেগেই রয়েছে। তাই বিজেপির লক্ষ্যপূরণের থেকে স্বার্থসিদ্ধি বড় হয়ে উঠেছে এখানে। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার অধীনে রয়েছে বিজেপির ৩০টি মণ্ডল। প্রতি মণ্ডল থেকে ১০ হাজার ৫০০ জন করে সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২৫ হাজার নতুন সদস্য সংগ্রহ হয়েছে জেলায়।
বিজেপির এই ব্যর্থতার পর তৃণমূল কংগ্রেস কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুরের কথায়, মানুষ বিজেপির ভাঁওতাবাজির রাজনীতি ধরে ফেলেছে। তাই মুখ ফেরাচ্ছে বাংলার মানুষ, মুখ ফেরাচ্ছে মতুয়ামহল। বাংলার মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে, তৃণমূলের সঙ্গে থাকবে। কেননা তৃণমূল ও রাজ্যের মা-মাটি মানুষের সরকারই একমাত্র বাংলার মানুষের পাশে থাকে।
আরও পড়ুন- রিও ডি জেনেরিওতে G20 শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন মোদি