নিজের বাড়ির সামনেই দুষ্কৃতী-হামলায় মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে ফোন করে পাশে থাকার বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সুশান্তকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এর পরে ফের মনোবল ফিরে পেয়েছেন তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলর।
শুক্রবার, রাতে কসবায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে (Sushanta Ghosh) লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তবে, রিভলবার থেকে গুলি না চলায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। স্থানীয়রা এক সুপারি কিলারকে ধরে ফেলে। ধৃত যুবরাজ জানান, মহম্মদ ইকবাল নামে এক ব্যক্তির তাঁকে সুপারি দিয়েছিল। এই ঘটনায় ভিন রাজ্যের যোগ পেয়েছে পুলিশ। বিহার থেকে আনা তিন দুষ্কৃতীদের বন্দর এলাকায় রেখে শুক্রবার ট্যাক্সি করে কসবায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর স্থানীয় যুবক যুবরাজের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০ হাজার টাকা দিয়ে তাঁকে স্কুটারে করে হামলার জন্য পাঠানো হয়। যুবরাজ ও ট্যাক্সি চালককে গ্রেফতার করে জেরা করেছে পুলিশ। বাড়ির সামনে এই ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সুশান্ত (Sushanta Ghosh)। প্রাথমিকভাবে তিনি জানান, “যেভাবে নিজের ওয়ার্ডে আমাকে আক্রমণ করা হল, তাতে আমি ব্যথিত। আগামী দিনে কাউন্সিলর থাকব কি না, সেটা সময় বলবে।” এমনকী ঘনিষ্ঠমহলে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়়ানোর কথাও বলেন তিনি। এর পরেই তাঁকে ফোন করেন তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার কথা শোনেন তিনি। সুশান্ত জানান, দল পাশে আছে। কোনও চিন্তা নেই। তার পরেই মনোবল ফিরে পান তিনি।
ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এক ট্যাক্সিচালক-সহ পুলিশের জালে হামলার মূলচক্রী ইকবাল ওরফে আফরোজ খান। খাস কলকাতায় তৃণমূল কাউন্সিলরের উপর এমন দুষ্কৃতী-হামলা নিয়ে পুলিশকে কড়া বার্তা দেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মেয়র বলেন, এনাফ ইজ এনাফ! উত্তরপ্রদেশ, বিহারের কালচার এখানে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। এটা বাংলা সংস্কৃতি নয়। পুলিশকে বলব, অ্যাক্ট নাউ! এত ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতী বাংলায় ঢুকছে কী করে? কোথায় ইন্টেলিজেন্স? রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারবার সতর্ক করেছেন, বাইরের রাজ্য থেকে যেন দুষ্কৃতীরা না ঢুকতে পারে। সীমান্তগুলিতে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। তা সত্ত্বেও কীভাবে ঢুকছে তারা? এদিন মহানাগরিক নিজে কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের বাড়ি যান। কথা বলেন সুশান্ত ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে। সুশান্ত ঘোষের বাড়ির নীচে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। সঙ্গে ছিলেন ডিসি (এসএসডি) বিদিশা কলিতা-সহ অন্য শীর্ষ পুলিশকর্তারা।