তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে ট্যাবের টাকা গায়েব হওয়ার পর তদন্তে নেমে রাজ্য পুলিশ বিভিন্নভাবে অ্যাকাউন্ট হ্যাকের (hack) তত্ত্ব পেয়েছিল। কার্যত সেই তত্ত্বে সিলমোহর লাগল তিন জেলা থেকে এই তদন্তে চারজনের গ্রেফতারির ঘটনায়। সাইবার ক্রাইম (Cyber Crime) পুলিশের তদন্তে এই টাকা পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে যে ফাঁক ফোঁকর দেখা গিয়েছে তার ভিত্তিতে এবার পড়ুয়াদের যে অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢুকবে সেই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার সংযোগ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা ভাবছে নবান্ন।
পূর্ব বর্ধমানের একটি স্কুলের পড়ুয়াদের ট্যাবের (tab) টাকা অ্যাকাউন্টে না ঢোকার পরই এই প্রকল্পের টাকা গায়েব হওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন। সাইবার শাখা ও জেলা পুলিশ সক্রিয় হওয়ার পরে রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে একইভাবে ট্যাবের টাকা গায়েব হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। বাড়তে বাড়তে সেই সংখ্যা ৩০০-তে পৌঁছায় যেখানে কোথাও নির্দিষ্ট পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। কোথাও একজনের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে ঢোকে। আবার কোথাও একজনেরই অ্যাকাউন্টে দুবার টাকা ঢোকার অভিযোগ পাওয়া যায়। সোমবার এই নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও করেন মুখ্যসচিব (Chief Secretary)।
পুলিশের তৎপরতায় মালদহ (Maldah) থেকে প্রথমে হাসেন আলি নামে এক সাইবার ক্যাফের মালিককে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে উঠে আসে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তাদের অ্যাকাউন্টের তথ্যও বদলে দেয় হাসেম। অন্যদিকে উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) চোপড়া ও ইসলামপুর থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চোপড়া (Chopra) থেকে গ্রেফতার দুই যুবক সাদ্দিক হোসেন ও মোবারক হোসেন। ইসলামপুর (Islampur) থেকে গ্রেফতার হয় আশারুল হোসেন। তিনজনেই হাসেমের মতো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
কীভাবে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা সম্ভব হল, বা এরা সকলে কোনও বিশেষ চক্রের হয়ে কাজ করছিল কিনা খতিয়ে দেখতে তিনজনকেই হেফাজতে নিয়ে তদন্তে পুলিশ। তবে ভবিষ্যতে এই প্রকল্পে বিভ্রাট এড়াতে এবার পড়ুয়াদের আধার সংযুক্তি বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা নবান্নের। আগামী বর্ষ থেকে এই পরিকল্পনা কার্যকর করার ভাবনা রাজ্য সরকারের।