ট্রেনের ইঞ্জিন এবং বগির মাঝে কাপলিং খুলতে গিয়ে রেলকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় রেলের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। দুই সহকর্মীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণেই প্রাণ হারাতে হয়েছে তৃতীয় জনকে, এমনটাই বলা হয়েছে প্রাথমিক ভাবে। এখনও পর্যন্ত রেল কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেনি। উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত , বিহারের বেগুসরাইয়ের বারাউনি স্টেশনে শনিবার সকালে মৃত্যু হয়েছে ২৫ বছরের রেলকর্মী অমর কুমারের। তিনি রেলের পয়েন্টস্ম্যান ছিলেন। ইঞ্জিন এবং বগির মধ্যেকার কাপলিং খোলাই তাঁর কাজ। শনিবারও সেই কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাপলিং খোলার জন্য তিনি যখন ইঞ্জিন এবং বগির মাঝের ফাঁকা অংশে প্রবেশ করেছিলেন, সেই সময়ে ইঞ্জিনটি তাঁর দিকে পিছিয়ে আসে। ফলে বগির সঙ্গে ওই রেলকর্মীর দেহ পিষে যায়। প্রাথমিক ভাবে রেলের পাঁচ আধিকারিক এই ঘটনার পর অভ্যন্তরীণ তদন্ত করেন।
অমর ছাড়াও দ্বিতীয় পয়েন্টস্ম্যান হিসাবে ঘটনাস্থলে ছিলেন মহম্মদ সুলেমন। মূলত তাঁকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে। যদিও নিজের পক্ষে অন্য যুক্তি দিয়েছেন তিনি। তাঁর ব্যাখ্যা, ট্রেনের চালক তাঁর সম্মতিসূচক ইশারা ছাড়াই ইঞ্জিন পিছিয়ে দেন।
সুলেমনের দাবি, কোনও ইঙ্গিত ছাড়াই আচমকা ইঞ্জিনটি পিছিয়ে দেন ট্রেনের চালক। এ ক্ষেত্রে চালককে হাত দেখিয়ে সঠিক সময়ের জন্য ইশারা করার কথা ছিল সুলেমনের। তিনি দাবি করেছেন, তিনি চালককে হাত দেখাননি। কোনও ইশারা করেননি। তার আগেই নিজের মতো করে ইঞ্জিন পিছিয়ে আনেন চালক। তার ফলেই এই মৃত্যু।
ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছেন রেল আধিকারিকেরা।
শনিবার সকাল ৮টা ১০ নাগাদ বারাউনি স্টেশনে ঢোকে লখনউ-বারাউনি এক্সপ্রেস। তার পর স্টেশন মাস্টার ইঞ্জিন থেকে পাওয়ার কার বিচ্ছিন্ন করার কাজ দিয়েছিলেন অমর এবং সুলেমনকে। ৮টা ২৯ মিনিট নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রেনের ওই বগি এবং ইঞ্জিন সরিয়ে তার মাঝখান থেকে রেলকর্মীর দেহ উদ্ধার করতে করতে ১০টা ১৫ বেজে গিয়েছিল। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় তার পর। এই ঘটনায় আরও উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করবে রেল।