এর আগে ছিল রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্কের (Bank) সংযুক্তিকরণ। এবার নজর গ্রামীণ ব্যাঙ্কে। দেশে আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কের চতুর্থ দফার সংযুক্তিকরণ এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। সংযুক্তিকরণের ফলে দেশের আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সংখ্যা ৪৩ থেকে কমে ২৮ হতে চলেছে। কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রক এনিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা চূড়ান্ত করতে চলেছে খুব শীঘ্রই। কেন্দ্রের লক্ষ্য, একটি রাজ্যে একটি রিজিওন্যাল রুরাল ব্যাঙ্ক। এবিষয়ে ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর রুরাল অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট বা নাবার্ডের (NABARD) মতামত নেওয়া হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রকের যুক্তি, এর ফলে ব্যাঙ্ক পরিচালনার খরচও যেমন কমবে, তেমনি মুনাফার একত্রীকরণের ফলে লাভের সুফলও ভোগ করবে গ্রামের সাধারণ মানুষ। কিন্তু আশঙ্কার কারণ হচ্ছে, এর ফলে কর্মী-সংকোচনের কোনও সম্ভাবনা রয়েছে কি না তা আদৌ স্পষ্ট নয়। যদি তা হয়, তবে বহু মানুষেরই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাজ হারানোর সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সবচেয়ে বড় কথা, আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণের ফলে বিকেন্দ্রীকরণের সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হতে পারেন প্রত্যন্ত গ্রামের প্রান্তিক মানুষ। ব্যাঙ্কের সংখ্যা কমে গেলে গ্রামীণ পরিষেবাতেও বিঘ্ন ঘটার সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মনে করা যেতে পারে ব্যাঙ্ককর্মীদের দুটি ইউনিয়ন চেয়েছিল পৃষ্ঠপোষক বা স্পনসর ব্যাঙ্কগুলোর সঙ্গেই মিশিয়ে দেওয়া হোক আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে।
১৯৭৬ সালে বিশেষ আইনবলে জন্ম নিয়েছিল এই আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক। উদ্দেশ্য, ক্ষুদ্র চাষি, কৃষিশ্রমিক এবং শিল্পীদের খুব স্বল্প সুদে ঋণদান। আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ শুরু হয়েছিল ২০০৪-০৫এ। ৩ দফার সংযুক্তিকরণের ফলে ব্যাঙ্কের সংখ্যা এখন ১৯৬ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩। এবার চতুর্থ দফার প্রতীক্ষা। এইভাবে ক্রমাগত সংযুক্তিকরণ প্রযুক্তির সর্বাধিক ব্যবহারের মাধ্যমে মূলধনের ভিতকে শক্ত করে পরিষেবার মানকে আরও উন্নত করবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করলেও বাস্তবে তা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে থেকেই যাচ্ছে সংশয়।
আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কে কেন্দ্রের অংশীদারির অঙ্ক ৫০ শতাংশ, পৃষ্ঠপোষক ব্যাঙ্কগুলোর ৩৫ শতাংশ এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অংশীদারি ১৫ শতাংশ। এই মুহূর্তে বাংলা, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত, কর্নাটক-সহ মোট ১২ রাজ্যে আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সংখ্যা একাধিক।