আমেরিকার নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) জয়। তার জেরে ভারত-বাংলাদেশে কী প্রভাব? এশীয় উপমহাদেশে এখন এই জল্পনা তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) অভিনন্দন জানিয়েছেন আমেরিকার (America) নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে। বাংলাদেশএর কেয়ারটেকার সরকার মহম্মদ ইউনূসের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। তবে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, মোদি-বন্ধু ট্রাম্পের জয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) ফের পালাবদলের সম্ভাবনা উসকে দিল। কারণ, প্রথম থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পক্ষে সওয়াল করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে সেদেশে সংখ্যালঘুদের আক্রমণের জেরে যদি মার্কিন সহায়তা বন্ধ করেন ট্রাম্প, তাহলে চাপে পড়বে ইউনূস সরকার-মত বিশেষজ্ঞদের। সেক্ষেত্রে ফের শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তণও অসম্ভব নয়।
প্রচারের সময় থেকেই হিন্দু বাংলাদেশী মার্কিন ভোটব্যাঙ্ককে টার্গেট করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লিখেছিলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বর্বর হিংসার তীব্র নিন্দা জানাই। উন্মত্ত জনতা তাদের আক্রমণ করেছে, লুঠপাট করেছে। বাংলাদেশ সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি ক্ষমতায় থাকলে এটা ঘটত না।” এরপরেই বিস্ফোরক অভিযোগ করে ট্রাম্প বলে, ”কমলা এবং জো সারা বিশ্বের এবং আমেরিকার হিন্দুদের উপেক্ষা করেছে। ইসরায়েল থেকে ইউক্রেন, এমনকী আমাদের দক্ষিণ সীমান্তেও বিপর্যয় নেমে এসেছে। কিন্তু আমেরিকাকে আবার আমরা শক্তিশালী করব এবং শক্তির মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনব!”
বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবশ্য এই টুইটকে আমল দিচ্ছে না। কারণ, তাদের মতে, এটা লবির (পড়ুন আওয়ামি লিগ ও ভারত সরকার) প্রভাব। তাতেই এই মন্তব্য রিপাবলিকান নেতার। তবে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, এই টুইট ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ নীতির ইঙ্গিত। বাংলাদেশে হাসিনার বিদায়ের পরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ফোনে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ভারতের প্রধানমমন্ত্রী। কিন্তু, তাকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি বাইডেন প্রশাসন। এমনকী, কমলা হ্যারিসও এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। তবে, ট্রাম্প যে সেই অবস্থান নেবেন না, সেটা স্পষ্ট।
আরও খবর: হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয়ের পথে ট্রাম্প, অভিনন্দন মোদি-স্টার্মার-নেতানিয়াহুর
পুনর্গঠনের জন্য আমেরিকার উপর আর্থিকভাবে নির্ভর হতে চাইছে ইউনূস সরকার। তারা মার্কিন সহায়তা চেয়েছে। পালাবদলের পরে ঢাকায় গিয়ে পরিদর্শনের পর বাইডেনের প্রশাসন ২০ কোটি ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের বিষয়টি মাথায় রাখলে ট্রাম্প সরকার সেই প্রতিশ্রুতি রাখবে কি না তা স্পষ্ট হয়। কারণ, দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প মনে করেন আমেরিকার এই মানবিক সহযোগিতা আসলে অর্থ অপচয়। তিনি প্রেসিডেন্ট হলে, গোটা বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা দিতে আগ্রহী হবেন না।
এই পরিস্থিতি চললে, বাংলাদেশের উন্নয়ন এমনকী ছমাস পরে যে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছিল, তা করা যাবে কি না, তাতেই সন্দেহ। সেক্ষেত্র বাংলাদেশের মানুষ বিশেষ করে এবার আওয়ামী লিগের কর্মী-সমর্থকরা অপশাসনের অভিযোগে গণ অভ্যুত্থানের রাস্তায় হাঁটেন তাহলে আবার পালাবদল হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ফিরতে পারেন শেখ হাসিনাও। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই কারণেই হয়ত ডিসেম্বর মাসে দেশে ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন (?) প্রধানমন্ত্রী। এখন কী হয় সেটাই দেখার।







 
 
 
 






























































































































