কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া বিভিন্ন শর্তের কারণে আবাস যোজনা প্রকল্পে যেসব উপভোক্তার নাম বাদ গেছে তাঁদের তথ্য পুনরায় যাচাই করতে ফের সমীক্ষা শুরু হচ্ছে। আগামীকাল থেকে সেই বিশেষ সমীক্ষা বা সুপার চেকিং শুরু হবে বলে নবান্নে প্রশাসনিক সূত্রে জন্য গেছে। যা চলবে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। জেলাশাসক, পুলিস সুপার, অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং মহকুমা শাসকের মতো উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এবার সেই তালিকা যাচাই করবেন। যোগ্য কেউ যাতে তালিকা থেকে বাদ না যান তা দেখার জন্যই সুপার চেকিং করা হবে। এছাড়া প্রথম পর্যায়ে চেকিংয়ের পরও যাতে কোনও অযোগ্য নাম তালিকায় না থাকে তাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সমীক্ষার কাজ ১৪ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে যাতে ভুল না হয়ে যায় তার জন্য বাড়তি সময় নেওয়া হতে পারে।
সরকারি কর্মীরা প্রথম পর্যায়ে সমীক্ষার কাজ করার পর অনেকেই বিভ্রান্ত হয়েছেন। অনেকের পাকাবাড়ি রয়েছে। তারপরও সমীক্ষার সময় তাঁরা গোয়ালঘর বা রান্নাঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই সব পাকাবাড়ির মালিকদের কেউ কেউ তালিকায় থেকে যেতে পারেন। সুপার চেকিংয়ে তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হবে। কোনও সুপারিশ মেনে তালিকা তৈরি হবে না। গ্রামবাসীদের অনেকের মধ্যে ধারণা রয়েছে নতুন করে তালিকায় নাম নথিভুক্ত করা হচ্ছে। সেটা ঠিক নয়। পুরনো তালিকা যাচাই করা হচ্ছে। তবে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পে যারা আবেদন করেছিলেন তাঁদের তালিকা যাচাই করা হচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সরকার প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই কারণে দ্রুত সমীক্ষার কাজ শেষ করার জন্য সমস্ত দফতরের কর্মীদের ময়দানে নামানো হয়েছে। আগামিকাল অর্থাৎ ৭ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সুপার চেকিং অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেঅয়া হয়েছে। কেননা এই সময় সরকারি ছুটি রয়েছে। ছুটির মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারি কর্মীরা কাজ করবেন।
নভেম্বর মাসে প্রাথমিক তালিকা তৈরি হওয়ার পর গ্রামের সাধারণ মানুষও যাচাইয়ের এই কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, যোগ্য উপভোক্তাদেরই মাথার ওপর পাকা ছাদ করে দেওয়া। তাই তালিকায় যাতে কোনও বেনোজল ঢুকে না যায়, তা নানাভাবে সুনিশ্চিত করতে চাইছে প্রশাসন। বাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য উপভোক্তা সুনিশ্চিত করতে একাধিক ধাপে যাচাই করা হচ্ছে। শুধুমাত্র প্রশাসনের আধিকারিকরাই বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করবেন, এমনটা নয়। প্রশাসনিক আধিকারিকদের তৈরি প্রাথমিক তালিকা টাঙানো হবে, ব্লক অফিস মহকুমা অফিস ও জেলাশাসকের অফিসে। ২১ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই তালিকা টাঙানো থাকবে। সেই তালিকায় কোনও অযোগ্য ব্যক্তির নাম থাকলে সাধারণ মানুষ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন। সেইমতো অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনের আধিকারিক ফের সেই ব্যক্তির বাড়িতে যাচাই করবেন। রাজ্য সরকার ২০ ডিসেম্বর থেকে আবাসের জন্য প্রথম দফার টাকা দেওয়ার কাজ শুরু করে দিতে চাইছে। সেই লক্ষ্যেই যতটা দ্রুত সম্ভব আর যতটা নিখুঁত সম্ভব তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ছেলের মৃত্যুর বদলা! যোগীরাজ্যে প্রধানশিক্ষককে প্রকাশ্যে গুলির নিদান মায়ের