“আমি কিন্তু পুরোপুরি নির্দোষ। আমায় ফাঁসানো হয়েছে”- সোমবার, শিয়ালদহ আদালত থেকে বেরিয়ে দাবি করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়র সঞ্জয় রাই (Sanjay Rai)। এরপরেই তার পক্ষ নিয়ে ভিডিও বার্তা স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের অন্যতম মুখ কিঞ্জল নন্দ (Kinjal Nanda)। পাল্টা ফের তাঁর শ্বশুরের প্রসঙ্গ তুলে কিঞ্জলকে ধুয়ে দিল জুনিয়র ডাক্তারদের নবগঠিত সংগঠন জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (WBJDA)। তাদের প্রশ্ন, কেন ধর্ষকের ‘সুরে সুর মিলিয়ে’ ধর্ষণেরই পক্ষ নিচ্ছেন কিঞ্জলরা?
সোমবার, আদালত থেকে বেরিয়ে প্রিজন ভ্যানে (Prison Van) উঠে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় বলে, “আমি কিন্তু পুরোপুরি নির্দোষ। আমায় ফাঁসানো হয়েছে”। এর পরেই WBJDF-এর তরফে কিঞ্জল নন্দ প্রশ্ন তোলেন, “কে তাঁকে ফাঁসাল? কেন ফাঁসাল? এর উদ্দেশ্য কী?“ সিবিআইয়েরই পুরো বিষয়টি খোলসা করা উচিত বলেও দাবি WBJDF-এর অন্যতম মুখের। এর পাল্টা West Bengal Junior Doctors’ Association-এর পক্ষে অতনু বিশ্বাস (Atanu Biswas) সমাজ মাধ্যমে তাদের পেজে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। আর সেখান থেকে WBJDF-এর দ্বিচারিতা নিয়ে ধুয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি, কিঞ্জলের শ্বশুরের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির প্রসঙ্গ তুলেও আক্রমণ করে WBJDA-এর অতনু। তিনি বলেন, “আরজি করে নির্যাতিতার ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত শিয়ালদহ কোর্ট চত্বরে জানিয়েছে যে, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের নেতা ডাক্তার কিঞ্জল নন্দ প্রশ্ন তুলেছেন কে ফাঁসাচ্ছে, কাকে ফাঁসাচ্ছে, কেন ফাঁসাচ্ছে? আমরা তাঁকে প্রশ্ন করতে চাই যে, তাঁরা যে এত দিন মানুষকে বলে এসেছেন মানুষ কার পক্ষে— ধর্ষকের পক্ষে না নির্যাতিতার জন্য বিচারের পক্ষে, তা হলে সেই সংগঠনের নেতারা এখন ধর্ষকদের সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলছেন কেন? ডব্লিউবিজেডিএফ আবারও নিজেদের তঞ্চকতা এবং দ্বিচারিতা প্রকাশ করল। তীব্র ধিক্কার জানাই।“
আরও পড়ুন: ভাঙা রেকর্ডে কাজ হবে না, বিজেপির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক জন বার্লা
অতনুর কথায়, নির্যাতিতার বাবা-মা সিবিআই তদন্ত চেয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করছে। এখন সিবিআই বলছে কলকাতা পুলিশ যাকে গ্রেফতার করে সেই আর জি কর-কাণ্ডে একমাত্র অভিযুক্ত- সেটা মেনে নিতে জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের সমস্যা কোথায়? ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে কথা বলা কি পরোক্ষ ভাবে ধর্ষণকেই সমর্থন করছে না-প্রশ্ন তোলেন অতনু।
এর পরেই কিঞ্জলের শ্বশুরের প্রসঙ্গ টেনে তীব্র আক্রমণ করেছে WBJDA। তাদের কটাক্ষ, কিঞ্জল মুখে ধর্ষকের সমর্থন শুনতে পাওয়া আশ্চর্যের নয়। কারণ, কিঞ্জলের শ্বশুরের বিরুদ্ধেই রোগীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। এর আগেও WBJDA -এর পক্ষে থেকে একটি ভিডিও বার্তায় কিঞ্জলের শ্বশুর ডাঃ প্রসন্নকুমার ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে মহিলা রোগীকে হেনস্থার যে অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে জানতে চাওয়া হয় জুনিয়র ডাক্তারের আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা কিঞ্জল এখন কোন পক্ষে? ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর প্রসন্ন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরই রোগিনী। গড়িয়াহাট থানায় IPC 354-এর অধীন রুবি পার্ক ইস্ট, কসবার বাসিন্দা ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তাঁর ভদ্রতার সুযোগ নিয়ে হেনস্থার অভিযোগ করেন ওই রোগিনী। এরপরেই WBJDA পোস্ট করা ভিডিও-তে জানতে চাওয়া হয়েছে, কিঞ্জল কার পক্ষে- নিজের শ্বশুরের না কি ওই নির্যাতিতার?