এর আগে একাধিক অভিযোগে নাম জড়িয়েছে বিজেপির নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের (Nishith Pramanik)। এবার কাঠগড়ায় বিজেপির নিশীথের আপ্ত সহায়ক (PA)। চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে পরিমল রায়ের (Porimal Ray) বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে। তবে, অভিযোগ উঠতেই পরিমলকে অস্বীকার করেছেন নিশীথ।
বিজেপির (BJP) প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের (Nishith Pramanik) আপ্তসহায়ক পরিচয় দিয়ে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পরিমল রায়ের বিরুদ্ধে। সিতাই বিধানসভার গোসানিমারি এলাকার বাসিন্দা পরিমলের বিরুদ্ধে রবিবার ময়নাগুড়ি ব্লকের দক্ষিণ মাধবডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ শীল থানায় প্রথম লিখিত অভিযোগ জমা দেন। এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ময়নাগুড়ি থানায় অভিযুক্ত পরিমল রায়ের নামে একের পর এক অভিযোগ জমা পরে সোমবার।
পুলিশ সূত্রে খবর, হিতেন্দ্র বর্মণ, জনার্দন বর্মন, সম্পদ রায়, দেবব্রত রায় এবং কমল বর্মণ সকলেই মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা। তাদেরও একই অভিযোগ চাকরি দেওয়ার নাম করে পরিমল রায় প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
মূল অভিযোগকারী বিশ্বনাথও মেখলিগঞ্জে থাকতেন। বর্তমানে তিনি ময়নাগুড়ির বাসিন্দা। তিনি ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করায় বাকিরাও ময়নাগুড়িতে অভিযোগ করেছেন। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খন্ডবহালে বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মামলা রুজু হয়েছে।”
বিশ্বনাথ শীল অভিযোগ অভিযোগের বিবরণে জানান, তিনি সিপিআইএম থেকে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। ২০১৬ সালে এলাকায় তাঁকে মণ্ডল সভাপতির দায়িত্ব দেয়। দলের পদাধিকারী সূত্রে নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। মন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর ভাগ্নির চাকরির জন্য আবেদন জানান নিশীথকে। চাকরির আশ্বাস দেন মন্ত্রী এবং তাঁকে দিল্লি যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ভাগ্নিকে সেখানে পাঠাবেন না বলেই সিদ্ধান্ত নেন বিশ্বনাথ। সেখানেই নিশীথের অপ্তসহায়ক হিসেবে পরিচয় দেন পরিমল রায়। আপ্তসহায়ক পরিমল চাকরি করে দেওয়ার নাম করে দফায় দফায় কয়েক লক্ষাধিক টাকা নেন বলে অভিযোগ। যে টাকা ব্যাঙ্কের এনএফটি মারফত এবং নগদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বনাথ।
অভিযোগ, চাকরির আশ্বাস দিয়ে প্রতিবেশী-সহ আত্মীয় সকলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন পরিমল। পরবর্তীতে কোনও চাকরি করে দিতে না পারায় বিশ্বনাথ শীল টাকা ফেরত চাইতে থাকেন। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও সেই টাকা কোনোভাবেই ফেরত দেয়নি বলে অভিযোগ। গত ২ নভেম্বর পরিমল রায় তাঁর মাকে বিশ্বনাথের বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। তারপর থেকেই পরিমলের মোবাইল বন্ধ পাওয়া গিয়েছে। এরপরেই টাকা ফেরত পাবেন না বুঝতে পেরে ময়নাগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ জমা করেন বিশ্বনাথ শীল। যদিও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এই বিষয়ে অভিযুক্ত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের আপ্ত সহায়ক পরিচয় দেওয়া পরিমল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। যদিও নিশীথ প্রামাণিকের দাবি, এই নামে তাঁর কোনও পিএ নেই। কোনওদিন ছিল না।