“আমি আমার কাজ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ফাউ ফুচকার মতো আন্দোলন আর আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ফাউ ফুচকার মতো করে কবে সিরিজ আসছে এই লুপটাতে আমি থাকতে চাই না।“ এতো দিন পরে মৌন্যতা ভেঙে আর জি কর-কাণ্ড ও তার পরবর্তী আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করলেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya)। তাঁর স্পষ্ট অবস্থান- “গণমাধ্যম, সমাজমাধ্যম নির্মিত যে লুপ, সেই লুপটাতে আমি আর থাকব না।“ নাম না করে সহ অভিনেতা সোহিনী সরকার, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়-সহ বাকিদের তীব্র খোঁচা ‘খোকা’র।৯ অগাস্ট আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ও হাসপাতালে (R G Kar Medical College And Hospital) তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর থেকেই রাজ্য তথা দেশ জুড়ো আন্দোলন চলেছে। অরাজনৈতিক আন্দোলন প্রথমে শুরু হলেও পরে তাতে মেশে রাজনীতির রং। আবার কিছু বিশিষ্টজন, বিশেষ করে রূপোলি পর্দার তারকারা “ধর্মেও আছি-জিরাফেও আছি”-র মতো আন্দোলনের পাশাপাশি নিজেদের কাজের প্রোমোশনই চালিয়ে গিয়েছেন পুরো দমে। শুধু তাই নয়, উৎসবের বিরোধিতা করে দুর্গাপুজোয় তাঁদের কী ছবি মুক্তি পাচ্ছে- তা জানাতে ভোলেননি। ছাড়েননি পুজোর বিজ্ঞাপনের কাজও। তবে, এই সবের মধ্যে অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে (Anirban Bhattacharya) কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি এতদিন। এমনকী, তাঁর স্ত্রী মধুরিমা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হলেও, ছিলেন না অনির্বাণ। আড়াই মাসের বেশি সময় কেটে যাওয়ার পরে এবার এই বিষয়ে নীরবতা ভাঙলেন অনির্বাণ। তাঁর কথায়, “এই লুপটাতে আমি থাকতে চাই না এবং আগামী ভবিষ্যতে চোখের সামনে পৃথিবী ধসে গেলেও যদি মনে হয় যে আমি আমার কাজেই স্টিক করে থাকব আমি তাই থাকব”
কোন লুপের কথা বলছেন অনির্বাণ?
তাঁর কথায়, কাজ নিয়ে বলতে গিয়ে ‘ফাউ ফুচকার মতো’ আন্দোলনে কথা বলবেন না। আবার আন্দোলনের মধ্যে ‘ফাউ ফুচকার মতো’ ওয়েব সিরিজ তথা নিজের কাজের দেবেন না। দ্বিতীয় পুরুষের খোকার মতে, “আমি এগুলোকেই বাস্তব হিসাবে নিই। একটা সময় পর আমি খুবই ঠান্ডা মস্তিষ্কে বসে আমার দেশ, আমার রাজ্য, আমাদের সমাজ,নীতি, আমাদের রাজনীতি এই সবকিছুকে ভাল করে এক জন সচেতন শিল্পী হিসাবে ভেবেছি। সব জেনে বুঝে দেখেছি আমি আর এই লুপে থাকব না। এই গণমাধ্যম, সমাজমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়ার সব কিছু দিয়ে নির্মিত যে লুপ যা প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে তৈরি হয়েছে সেটাতে আমি থাকব না।”
তবে, মৌনতা নিয়ে কটাক্ষের শিকারও হতে হয় অনির্বাণকে। সেই বিষয়টিকে একেবারেই পাত্তা দিতে চাননি তিনি। বলেন, “আমি যেটা করি, শুধু সেটাই করব। আমি যদি রাজনীতি করি শুধু রাজনীতিই করব। আমি যদি সিদ্ধান্ত নিই যে শুধু সিনেমা সিরিজ করি তাহলে শুধু সেটাই করব। সেটা যতই অদ্ভূত লাগুক না কেন। আমি যেটা বোধ করেছি বাইট দিয়ে, বক্তব্য রেখে কিছু হবে না। আর জি করের ঘটনা এবং তত্পসরবর্তী আন্দোলন স্বতন্ত্র। সামাজিক ভাবে অত্যন্ত গম্ভীর একটি বিষয়। আমার কাজ আমার কাছে স্বতন্ত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুটোর তুলনা করছি না। আমি আমার কাজ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ফাউ ফুচকার মতো আন্দোলন আর আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ফাউ ফুচকার মতো করে কবে সিরিজ আসছে এই লুপটাতে আমি থাকতে চাই না। আগামী ভবিষ্যতে চোখের সামনে পৃথিবী ধ্বসে গেলেও যদি মনে হয় আমি আমার কাজেই অনড় থাকব আমি তাই থাকব।”