ভোট বৈতরণী পার হতে অযোধ্যায় রামমন্দিরের (Ram Mandir) নামে হিন্দুত্বের ধ্বজা ওড়ানোর চেষ্টা করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP), রাজনীতির ময়দানে সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছে দেশের মানুষ। এবার ঘটা করে উদ্বোধন হওয়া মন্দিরকে পর্যটনের অন্যতম ডেস্টিনেশন করতে চাওয়ার আইডিয়াও ফ্লপ প্রমাণিত হলো। ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি অযোধ্যার মহর্ষি বাল্মীকি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Maharshi Valmiki International Airport) উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) রোড-শো করেছিলেন। এক বছর সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই মাছি তাড়াচ্ছে সেই এয়ারপোর্ট। বিমানবন্দর কর্তাদের বক্তব্য, রামমন্দির উদ্বোধনের পরে দেশে বিপুল উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল। গত ন’মাসে সেই উন্মাদনা কেটে গিয়েছে। মোদি ভাঁওতার আরও এক নিদর্শন প্রকাশ্যে।
মন্দির উদ্বোধনের ৯ মাসের মধ্যেই অযোধ্যার মহর্ষি বাল্মীকি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়ান কমতে শুরু করেছে। সারা দিনে ভোটে দশ থেকে বারোটা বিমান চলাচল করে, যেখানে যাত্রী সংখ্যা হাতে গোনা। সাড়ে ছ’হাজার বর্গমিটারের টার্মিনাল ভবন বেশিরভাগ সময় জনমানবশূন্য থাকছে । স্পাইস জেট আগেই উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে। ইন্ডিগো, ভিস্তারাও সেই পথে হাঁটতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। বিমানকর্তারা বলছেন অযোধ্যার মন্দির নির্মাণ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি, এছাড়া ভাল মানের হোটেলের সংখ্যাও খুব কম। স্বভাবতই তীর্থযাত্রী থেকে পর্যটক সকলের আগ্রহই কমছে। তাড়াহুড়ো করে মন্দির উদ্বোধন যে আসলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে জেতার ঘুঁটি ছিল সেটা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারার পর থেকেই ভ্যানিশ হয়েছে রাম মন্দিরের ম্যাজিক। তারই প্রভাব পড়ছে পর্যটন ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিমান পরিষেবায়। উত্তরপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকার যতই পরিসংখ্যান দিয়ে বিষয়টিকে অন্যদিকে ঘুরানোর চেষ্টা করুক না কেন, পর্যটন শিল্পমহল সূত্রের বক্তব্য অযোধ্যায় যেসব সাধারণ তীর্থযাত্রীর আসছেন তাঁরা বেশি টাকা খরচ করে বিমান সফর করতে রাজি নন। ফলে রাম রাজ্যের এয়ারপোর্ট শুনশান।আগামী বছরের গোড়ায় প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ রয়েছে। মহাকুম্ভে যাঁরা যাবেন, তাঁরা অযোধ্যায় রামমন্দির দেখতে আগ্রহী হবেন বলে যোগী সরকারের আশা। কিন্তু বাস্তব ছবিটা বলছে যে মোদি সরকারের উপর মানুষের বিশ্বাস নেই। বিজেপির ধর্ম নিয়ে রাজনীতিকে আর সমর্থন করছেন না কেউই। তারই প্রভাব পড়েছে অযোধ্যায়।