বিরোধীদের পিছনে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা মোদি সরকারের দুই মন্ত্রকই এবার কর ফাঁকিতে অভিযুক্ত। এমনকি এই তালিকায় দেশের সবথেকে বড় কর্মসংস্থান দেওয়া রেল দফতরের (Indian Railway) নাম উঠে এসেছে। রেল ছাড়াও অভিযুক্ত যোগাযোগ মন্ত্রকের (Ministry of Communications) অধীন ডাক বিভাগ। জিএসটি (GST) ফাঁকি সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, কেন্দ্রের এই দুই মন্ত্রক থেকে জিএসটি ফাঁকির পরিমাণ ৪২৩ কোটি টাকার বেশি। পাশাপাশি একাধিক রাজ্য সরকারি সংস্থা যে হারে গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে তা কয়েক হাজার কোটি। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে কর ফাঁকির এই চিত্রে রাজ্যগুলির মধ্যে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র (Maharashtra)।
পরোক্ষ কর পর্ষদের আওতাধীন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব জিএসটি ইন্টেলিজেন্স (ডিজিজিআই) (DGCI) কর ফাঁকি ঠেকাতে কাজ করে। এই সংস্থার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ফিনান্স কর্পোরেশনের (Railway Finance Corporation) জিএসটি বাবদ মেটানোর কথা ছিল ২৯৭ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা। কিন্তু এই টাকা মেটানো হয়নি। ভোপাল জোনের আধিকারিকরা এই করফাঁকির হদিশ পেয়েছেন। আর ডাকবিভাগের করফাঁকির তথ্য সামনে এনেছেন চণ্ডীগড়ের আধিকারিকরা।
ডাক বিভাগের অধীন ডিরেক্টরেট অব পোস্টাল লাইফ ইনসিওরেন্সের মোট ১২৬ কোটি ১৮ লক্ষ টাকার জিএসটি ফাঁকির তথ্য সামনে এসেছে। গোটা দেশে ২৩টি সার্কেল থেকে তারা ডাক জীবন বিমা এবং গ্রামীণ ডাক জীবন বিমা বিক্রি করে। যেসব এজেন্ট এই বিমা পলিসিগুলি বিক্রি করেন, তাঁদের প্রাপ্য কমিশন থেকে জিএসটি বাবদ টাকা কেটে জিএসটি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা করাটাই নিয়ম। কিন্তু টাকা কেটে নেওয়া হলেও তা ডাকবিভাগ জমা করেনি বলে খবর।
এদিকে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ের আবাসন ও শিল্পোন্নয়ন নিগম শহরের পরিকাঠামো উন্নয়নে কাজ করে। তারা আবাসন ও বাণিজ্যিক জমি ও পরিকাঠামো লিজ দেওয়ার উপর জিএসটি আদায় করলেও কোনওরকম টাকা জমা করেনি। এক্ষেত্রে ১১১ কোটি টাকার কর ফাঁকির তথ্য উঠে এসেছে। মহারাষ্ট্র সরকারের শিল্পোন্নয়ন নিগম একইভাবে লিজ বাবদ নেওয়া জিএসটির ৬৭৮ কোটি টাকা মেটায়নি কেন্দ্রীয় সরকারকে। সড়ক থেকে টোল নেওয়ার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দেয় মহারাষ্ট্র স্টেট রোড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড। একইসঙ্গে মুম্বই-পুণে এক্সপ্রেসওয়ে লিমিটেড বেসরকারি সংস্থাকে তোল আদায়ের জন্য বরাত দেয়। তাদের থেকে টোল ছাড়া রাজস্ব আদায় হলেও জিএসটি মেটায়নি ওই দুই সংস্থা। এক্ষেত্রে মোট কর ফাঁকির পরিমাণ ২ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা।