বারবার জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Mamata Banerjee) অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসকদেরও একইভাবে বৈঠকে ডেকে তাঁদের দাবি শোনার পথে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সোমবারের বৈঠকে রাজ্যের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব (chief secretary) ছাড়া কারো বক্তব্য শোনা হয়নি শুধুমাত্র জুনিয়র চিকিৎসকদের বক্তব্য শোনা হবে বলেই। প্রায় দুঘণ্টার বৈঠকে তাঁদের সব দাবি শুনে ৯৯ শতাংশ কাজের উদ্যোগ নেওয়ার হয়ে গিয়েছে জানিয়েই অনশন তুলে নেওয়ার আবেদন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের পরিষেবায় যাতে সুষ্ঠুভাবে ফিরে যান জুনিয়র চিকিৎসকরা, সেই আবেদনও বারবার জানান মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রের রিপোর্ট তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা দেশের মধ্যে প্রথম। আগে চণ্ডীগড় এই স্থান দখল করে থাকলেও এখন সেই স্থান বাংলার। সেই সূত্রেই বাংলায় যাতে সেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও রাজ্যের সেই সুনাম বজায় থাকে, তার জন্য সদর্থক আলোচনার আবেদন জুনিয়র চিকিৎসকদের জানানো হয় রাজ্যের তরফ থেকে। মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে জানান, “আমরা চাই না একটিও ছাত্র বা ছাত্রী খারাপ শিকার হোক। বেশ কিছু জায়গায় এখনও ব়্যাগিং আছে। আমাদের মানসিকতা আজও বদলায়নি। সেগুলো বদলাতে হবে। এরজন্যই সামাজিক পরিকাঠামো, সামাজিক সুস্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থা খুব প্রয়োজন। এর জন্য রেসিডেন্সিয়াল ডাক্তার, জুনিয়র ডাক্তার সবার খুব প্রয়োজন।”
প্রথমবার সোমবার নবান্নের জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং হয়। সেখানে স্পষ্ট দেখা যায়, প্রত্যেক জুনিয়র চিকিৎসকের বক্তব্য মন দিয়ে শোনেন তিনি। সেই সঙ্গে অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা কে কেমন আছেন তা যে প্রতিনিয়ত খবর নেন তিনি তাও তাঁদের স্বাস্থ্যের খবরের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দেন। সেই সঙ্গে আন্দোলনকেও যে তিনি মানবিক দিক থেকেই দেখেছেন তাও স্পষ্ট করে দেন একাধিক কমিটি তৈরি ও মধ্যে দিয়ে। সেই সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে তিনি পরীক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার বার্তা দেন এদিনের বৈঠকে। তিনি জানান পরীক্ষার অভিযোগের সিস্টেমেটিক তদন্ত হবে। “কেউ কারো পক্ষে বা বিপক্ষে পক্ষপাতিত্ব যাতে না করতে পারে তা দেখা হবে। পরীক্ষা স্বচ্ছভাবে হবে। তত্ত্বাবধানে থাকবেন মুখ্যসচিব।”
এদিনের বৈঠকে প্রতি কলেজে ৫ টি করে কমিটি তৈরির দাবি জানান জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের সেই দাবি মেনেই যে রাজ্য সরকার অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটি, গ্রিভান্স সেল, টাস্ক ফোর্স, কলেজ লেভেল কমিটি, কলেজ মনিটরিং কমিটি তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছে তাও জানানো হয়। এই বিষয়ে স্টেট টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে বিস্তারিত দাবি জানাতে বলা হয় জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের। জুনিয়র চিকিৎসকদের কমিটির আইনি বৈধতা না থাকলেও তাঁদের আন্দোলনকে মান্যতা দেওয়ার কারণেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিকাঠামো উন্নয়নে যে টাস্ক ফোর্স তৈরি হয়েছে তাতে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধি রাখার বিষয়ে মান্যতা দেন মুখ্যমন্ত্রী।