জীবন বিমা থেকে জীবনদায়ী ওষুধ, জিএসটি (GST) চাপিয়ে দেশের মানুষের সুস্থতার অধিকারের উপর কার্যত বাধা বসিয়ে দিয়েছিল তৃতীয় মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরই। প্রথম এই নিয়ে সরব হয় বাংলার শাসকদল তৃণমূল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনকে (Nirmala Sitharaman) এই জিএসটি প্রত্যাহারের আবেদন জানান। সাংসদদের পক্ষ থেকেও চাপ বাড়ানো শুরু হয় কেন্দ্রের সরকারের উপর। সাধারণ মানুষের অধিকারের বিষয়টি প্রকাশ্যে তুলে ধরতেই অবশেষে সচেতন মোদি সরকার। জিএসটি নিয়ে শনিবার মন্ত্রী পরিষদের (Group of Ministers) সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত দেখা গেল জীবন বিমা থেকে জিএসটি তুলে নিতে চলেছে কেন্দ্র সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় অর্থমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে দাবি করেছিলেন, স্বাস্থ্যই সম্পদ। সেই জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষায় দরিদ্র কৃষিজীবী থেকে শ্রমিক শ্রেণির মানুষ স্বাস্থ্য বিমা (Health Insurance) ও জীবন বিমা (Life Insurance) করিয়ে থাকেন। সেই বিমার প্রিমিয়ামে (premium) জিএসটি বসানোর অর্থ সাধারণ মানুষের উপর করের বোঝা বাড়ানো। সেই সঙ্গে জিএসটি চাপলে বিমা করানোর প্রবণতা কমবে। বিমা সংস্থা সহ তার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়বেন, উল্লেখ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী পরিষদের (GoM) বৈঠকে জীবন বিমার উপর জিএসটি প্রত্যাহারের পক্ষে সুপারিশ করা হয়। সেক্ষেত্রে জীবন বিমার প্রিমিয়ামে জিএসটি না চাপারই সম্ভাবনা। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য বিমায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রিমিয়ামে জিএসটি প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়। স্বাস্থ্য বিমার (Health Insurance) উপর থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি (GST) প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে মোদি সরকার৷ মন্ত্রী পরিষদের এই সিদ্ধান্ত সুপারিশের আকারে পেশ করা হবে জিএসটি কাউন্সিলের (GST Council) কাছে৷ তারপরেই এই বিষয় নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করবে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক৷ নভেম্বরে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক আয়োজিত হওয়ার কথা৷ তার আগেই জারি করা হতে পারে জীবন বিমা ও স্বাস্থ্য বিমার উপর থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহারের সরকারি বিজ্ঞপ্তি, নয়াদিল্লিতে দাবি জানানো হয়েছে সরকারি সূত্রে৷
জীবন ও স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে জিএসটি ইস্যুতে মোদি সরকারের অন্দরেও ফাটল ধরেছিল৷ বেশ কয়েকটি শরিক দলও চাইছিল বিমা ও স্বাস্থ্য বিমার উপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহার করা হোক৷ প্রকাশ্যে সরব হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গড়করিও (Nitin Gadkari)। ফলে মন্ত্রী পরিষদের (GoM) বৈঠকে নেওয়া সুপারিশগুলি কেন্দ্র সরকার মানতে চলেছে বলেই দাবি সূত্রের।