হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের

0
3

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তিনি ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে এই ট্রাইব্যুনাল।১৮ নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে এই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে চলা হত্যাকাণ্ডে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বৃহস্পতিবার সকালে বিচারকাজ শুরু হয়েছে।যাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রাক্তন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রাক্তন সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, প্রাক্তন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রাক্তন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুণ অর রশীদ প্রমুখ।

পরোয়ানা জারির আবেদনের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের আমল এবং জুলাই-অগস্টে তাদের ভূমিকা তুলে ধরা হয় ।এই অপরাধগুলি সারা বাংলাদেশ জুড়ে সংঘটিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম এই অপরাধের আসামি যারা, তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাদের গ্রেফতার করা না হলে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করাটা অসম্ভব কঠিন। তাদের ভয়ে সাধারণ মানুষ, এমনকি শহীদ পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছিলাম।’

দ্বিতীয় আরেকটি আবেদনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং প্রাক্তন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয়েছে। সেটিও মঞ্জুর করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই অপরাধীদের অনেকে এখনও রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। সে কারণে তাদের সবার নামপ্রকাশ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।এর ফলে হাসিনাকে এবার প্রত্যর্পণের দাবি জানাতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস সহ একাধিক উপদেষ্টা একাধিক বার বলেছেন, হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে সরকার আদালতের নির্দেশ মেনে চলবে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ অগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবি করা হয়েছে।