খাবও না, খেতেও দেব না! চিকিৎসকদের উদ্দেশে কেন বললেন কুণাল? জানালেন ১৩ দফা দাবি

0
4

১০ দফা দাবি নিয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তার পাল্টা ১৩ দফা দাবি জানালেন তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সেখানে চিকিৎসকদের অন্যায্য কাজের কার্যত পর্দাফাঁস করে দিয়েছেন কুণাল। প্রথমে এই বিষয় নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় (Social Media) পোস্ট করেন তিনি। পরে, বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয় তৃণমূল (TMC) নেতা জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবির পাশাপাশি এই ১৩ দফা দাবিও খতিয়ে দেখা হোক।
কী কী দাবি জানান তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ?
১. সব হাসপাতালে ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হোক। সঙ্গে তাঁদের ডিউটির সময় অনুযায়ী উপস্থিতি, রোগী দেখাটাও সুনিশ্চিত হোক।
২. সরকারি হাসপাতালের কাজ ফেলে, সুবিধেমত ডিউটি বদলে বাকি সময় প্রাইভেট হাসপাতালে কাজ করা চলবে না।
৩. প্রেসক্রিপশনে একই গুণমানের কমদামী ওষুধের বদলে ওষুধ কোম্পানির প্রভাবে দামী ওষুধ লেখা চলবে না। জেনেরিক টার্মে ওষুধ লিখুন, কোম্পানির ব্র্যান্ড নয়।
৪. ওষুধ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম (পেস মেকার-সহ) কোম্পানির স্পনসরশিপে অনুষ্ঠান, দেশবিদেশে ভ্রমণ চলবে না। ওঁরা সমাজসেবা করেন না। কমিশন, কাটমানির অভিযোগের বন্ধ/সুরাহা করতে হবে।
৫. কথায় কথায় বিভিন্ন পরীক্ষার নামে নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কেউ যেন কমিশন না নেন।
৬. ডাক্তারদের ফি যাতে মানুষের নাগালে থাকে, তার কাঠামো চাই। প্রত্যেককে রশিদ দিতে হবে।
৭. হয় সরকারি, নইলে বেসরকারি বেছে নিন, দুটো একসঙ্গে কোনো নিয়ম দেখিয়ে চলবে না।
৮. সাধারণ মানুষের করের টাকার ভর্তুকিতে যাঁরা সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়বেন, তাঁদের সরকারি কাজেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোটি টাকা দিয়ে বেসরকারিতে পড়াদের কথা আলাদা।
৯. স্পেশালিস্ট, সিনিয়রদের ঠিকমত ডিউটি করতে হবে। লবি করে কলকাতা পোস্টিং বা জেলায় গেলেও কৌশলী রোস্টারে তিন/চার দিন কলকাতায় এসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস চলবে না। জেলার হাসপাতালে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে।
১০. শূন্যপদ পূরণ হোক। পরিকাঠামো বাড়ুক। কিন্তু নিজেদের কর্মক্ষেত্রকে রোগীবন্ধু রাখার দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি ডাক্তারদেরও নিতে হবে। কারণ সরকারি কাঠামোতে দুর্বলতা দেখিয়ে রোগীকে বেসরকারিতে যেতে বাধ্য করা/টেনে দেওয়ার অভিযোগ আছে, বন্ধ করতে হবে এসব।
১১. বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তিতে বিপুল টাকা, পড়তে টাকা, সেমিস্টারে ফেল করিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে পাশ- এইসব অভিযোগবন্ধনীতে কিছু ডাক্তারও আছেন। এসবে স্বচ্ছতা ও তদন্ত দরকার।
১২. বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কিছু কোটা দীর্ঘকাল আছে। মুখ্যমন্ত্রীর কোটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধ করেছেন। কিন্তু হাসপাতালের কোটাগুলি নিয়ে বহু অনিয়মের অভিযোগ, বহু ডাক্তার জানেন, সেগুলি বন্ধ হোক বা স্বচ্ছতা আনা হোক।
১৩. চিকিৎসার গাফিলতিতে নির্দিষ্ট FIR বাধ্যতামূলক হোক।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (R G Kar Medical College And Hospital) তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের নৃশংস ঘটনায় প্রথম থেকে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছে তৃণমূল। দোষীর ফাঁসির সাজা চেয়েছেন তৃণমূল সভানেত্রী থেকে শুরু করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশিরভাগ দাবি মেনে কার্যকর করার পথে এগোচ্ছে রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে কিছু বিরোধী রাজনৈতিক দলের উস্কানিতে নতুন করে ১০ দফা দাবি জানিয়ে অনশনে বসেছেন কয়েকজন জুনিয়র চিকিৎসক (Junior Doctor)। তার প্রেক্ষিতে এবার রোগী হয়রানি ও বিল বৃদ্ধি নিয়ে চিকিৎসকদের জারিজুরি ফাঁস করলেন কুণাল (Kunal Ghosh)।