‘দ্রোহ’ বলে বিপাকে CPM, কুণালের খোঁচার জবাব দিতে আসতে হল পবিত্র সরকারকে!

0
1

দ্রোহ মানে কী? অভিধানে তার অর্থ কী? দ্রোহের কার্নিভালের অর্থ তো সাংঘাতিক! জুনিয়র ডাক্তারদের সামনে রেখে দ্রোহ কার্নিভালের ডাক দিয়ে বিপাকে পড়ে সিপিএ কারণ এই প্রশ্নগুলিই তাদের দিকে ছুড়ে দেন তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। মুখ বাঁচাতে শেষে ভাষাবিদ পবিত্র সরকারকে ডেকে এনে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে বামেরা। আর তিনিও স্বীকার করেন যে ‘দ্রোহ’ মানে অনিষ্ট। তবে একটি অর্থে সেটা বিরোধিতা। কিন্তু তাতেও বিদ্রোহ কথাটির কোনও হদিস পবিত্র সরকারও দিতে পারেননি।

দ্রোহ কার্নিভাল নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কুণাল লেখেন,
“যাঁরা পুজোর কার্নিভালে যাবেন, তাঁরা, বিপুল মানুষ, বাংলার উৎসব সংস্কৃতিতে আছেন; বিচ্ছিন্ন কুৎসিত সামাজিক অপরাধের নিন্দা ও ন্যায়বিচারের দাবিতেও আছেন। যাঁরা রেড রোডে থাকবেন, তাঁরাও ধর্ষক, খুনির ফাঁসি চান।


অন্যদিকে যাঁরা তথাকথিত দ্রোহের (অপকার, অনিষ্ট) কার্নিভালে থাকবেন, নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক সংগঠনের সামান্য কিছু অরাজনীতির মুখোশধারী, তাঁরা ন্যায়বিচারের নামে চেয়ারের রাজনীতি করছেন, লক্ষ্য অরাজকতা, চেষ্টা বাংলার কার্নিভালের বদনামের। পুজো, উৎসব বয়কটের ডাকে জল ঢেলেছেন কোটি কোটি মানুষ, নিজেরাও দ্বিচারিতায় ধরা পড়েছেন অনেকে; এখন কার্নিভাল ভাঙিয়ে নিজেদের প্রচারের চেষ্টা। যেমন পুজো মানি না বলে মণ্ডপের পাশে স্টল করে বই বিক্রি; তেমনই কার্নিভালের কাছে নাটক।”

শব্দ নিয়ে বিপাকে পড়েছে বুঝতে পারেন ফেসবুকীয় বামেরা। কিন্তু ততক্ষণে তাঁদের কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়ে গিয়েছে। ফলে শরণাপন্ন হতে হয় ভাষাবিদ পবিত্র সরকারের। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার সকালে নিজের ফেসবুক পেজে দ্রোহ শব্দের অর্থ নিয়ে পোস্ট করতে হয় বর্ষীয়ান এই ভাষাবিদকে। তিনি লেখেন,
“‘দ্রোহ’ কথাটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলা অভিধানে ‘অনিষ্ট’, ‘দ্বেষ’ ইত্যাদি অর্থ নিয়ে অনেকে দুশ্চিন্তিত হয়েছেন। প্রথমে একটা কথা বলি যে, অর্থ মানুষ তৈরি করে, অভিধান নয়। অভিধান মানুষের তৈরি আর পরিবর্তিত অর্থ নথিবদ্ধ করে মাত্র।

দ্বিতীয় কথা হল, মনিয়ার উইলিয়ামসের সংস্কৃত অভিধান খুলে দেখলাম যে, to hurt, seek to harm-এর সঙ্গে be hostile to অর্থও আছে। অর্থাৎ বিরুদ্ধতা পোষণ করা। এই অর্থে বিদ্রোহের কাছাকাছি। অর্থাৎ বিরুদ্ধতা থেকেই বিদ্রোহ ঘটে। সংস্কৃতেই বিদ্রোহের ইঙ্গিত তো আছে। এত বেশি পাণ্ডিত্যপূর্ণ তর্কের কী আছে।”

অর্থাৎ এই থেকেই স্পষ্ট বিদ্রোহ বা আন্দোলনের সঙ্গে এই শব্দের কোনও যোগ নেই। উল্টে যোগ রয়েছে অনিষ্ট, দ্বেষের মতো শব্দের সঙ্গে। যা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন পবিত্র সরকারও। তিনি লিখেছেন যে একটি অর্থ আছে ‘বিরুদ্ধ মত পোষণ করা’। কিন্তু বিরুদ্ধ মত পোষণ করার অর্থই বিদ্রোহ হতে পারে না- সে কথা হয়তো নিজেও জানেন বর্ষীয়ান এই ভাষাবিদ।

আরও পড়ুন- ভোটের ময়দানে প্রথম বার! রাহুলের ছেড়ে আসা ওয়ানড়ে প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা